‘ব্রয়লারের দাম ১৯০ টাকা ঘোষণা দিয়ে ১৬০ টাকা কীভাবে হলো গোয়েন্দা সংস্থা দেখছে’

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেছেন, আমি ইতোমধ্যে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে মাঠে নামিয়ে দিয়েছি, কথা বলেছি তাদের সঙ্গে। তারা (ব্যবসায়ীরা) ঘোষণা দিলো ১৯০-১৯৫ টাকা , আজ কেন তারা ১৬০ টাকায় বিক্রি করছে? আমাদের প্রান্তিক চাষিদের কিন্তু তাহলে লস দিয়ে বিক্রি করতে হবে যেহেতু ফিডের দাম বেশি। আমাদের ক্ষুদ্র খামারিরা বড় ধরনের ক্ষতির শিকার হবে। আমরা এই বিষয়টি দেখছি।

সোমবার (২৭ মার্চ) তিনি এ তথ্য জানান। এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেন, তাহলে আমার প্রশ্ন এখানে, যে মুরগি ফার্ম থেকে চারদিন আগে ২২০-২৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, তারা ঘোষণা দিলো ১৯০-১৯৫ টাকা, সেটি আজ তারা ১৬০ টাকায় বিক্রি কীভাবে করে। তাহলে এই ৭০-৮০ টাকার যে গ্যাপ এটি কি তারা জনগণের পকেট থেকে তুলে নিয়ে গেছে? এই প্রশ্ন আমি আপনাদের কাছে রাখলাম এবং সরকারের যারা সংশ্লিষ্ট আছেন এই বিষয় নজর দেওয়ার জন্য লিখিতভাবে জানাবো। আমি মনে করি অস্থিতিশীল মুরগির বাজারে আজ স্বস্তি এসেছে।

তিনি জানান,  ব্রয়লার মুরগির দাম মার্চের শুরুতে ২৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। তখন আমরা সারা দেশে অভিযান পরিচালনা করেছিলাম গত ৫-৬ মার্চ। সেখান থেকে তথ্য উপাত্ত নিয়ে ৯ মার্চ পোল্ট্রি সেক্টরের প্রান্তিক চাষি, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী এবং বড় বড় ফার্মগুলোকে আমরা ডাকলাম। সেসময় বড় বড় ফার্মগুলো জানালো তাদের উৎপাদন খরচ ১৩০-১৪০ টাকা। যেহেতু ফিডের দাম, বাচ্চার দাম বেশি, কন্ট্রাক্ট ফার্মের বাইরে যারা আছেন তাদের উৎপাদন খরচ ছিল ১৬০ টাকা। সেই মিটিংয়ের পর আমরা আটটি সুপারিশ সরকারের কাছে করেছি। কিন্তু দেখা গেলো, সেই সুপারিশ কোনও কাজ করেনি। বরং দাম আরও বেড়ে গেল। দাম বেড়ে ফার্ম পর্যায়ে দাঁড়ালো ২২০-২৩০ টাকা। যেটার প্রভাব নিউমার্কেট কাঁচা বাজারে দেখেছি রমজানের দুইদিন আগে। সেখানে দেখলাম ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। সেদিন আমরা বড় চার কোম্পানিকে শোকজ করলাম।

ভোক্তার ডিজি জানান,  রমজান শুরুর আগের দিন বৃহস্পতিবার তারা আমাদের এখানে শোকজের জবাব দেয়। ১৯০-১৯৫ টাকায় ব্রয়লার মুরগি বিক্রির ঘোষণা দেয় কাজী ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। শুক্রবার মুরগির দাম ২৫০ এ নেমে আসলো। শনিবারে এটি আরও কমলো। গতকাল বাজারে ২২০-২৩০-এ নেমে গেল। আমি আজ সকালে বাজার থেকে রিপোর্ট নিলাম, কাপ্তান বাজারে আমাদের টিম অভিযান করে রিপোর্ট করলো সেখানে খুচরা পর্যায়ে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। তাহলে ফার্ম থেকে যেটি ১৯০ টাকা ঘোষণা দেওয়া হল সেটি খুচরা পর্যায়ে ১৯০ টাকা। আমি খবর নিয়েছি ফার্ম থেকে গতকাল ১৬০ টাকা দরে মুরগি বিক্রি করেছে।

সোমবার রাজধানীর কাপ্তান বাজারে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। এসময় মুরগির ক্রয়মূল্য না দেখাতে পারায় এবং বিক্রির রসিদ না দেওয়ায় রাজধানীর কাপ্তান বাজারে মুরগির একটি আড়ত বন্ধ করে দেয় তারা। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার এসময় আড়তদারকে কাগজপত্র নিয়ে ভোক্তার কার্যালয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। বাজারে ক্রয়-বিক্রয়ের তালিকা টানানো, ক্রয় রশিদ সংরক্ষণে রাখতে নির্দেশনা দিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।

আরও পড়ুন- 

চাহিদা বাড়লে এসএমএস করে মুরগির দাম বাড়ায় তারা

রসিদ না থাকায় বন্ধ করে দেওয়া হলো মুরগির আড়ত