২ সহপাঠীকে হত্যার অভিযোগে দুই শিক্ষার্থী গ্রেফতার

পটুয়াখালীর বাউফলে দুই স্কুলশিক্ষার্থীকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত রায়হান ও তার সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। র‌্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৩-এর একটি দল নরসিংদীর রায়পুর উপজেলার একটি চরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।

মামলার প্রধান অভিযুক্ত রায়হান কাজী ওরফে রিমন ও তার সহযোগী হাসিবুল ইসলাম ওরফে হৃদয় বাউফল উপজেলার ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। দ্বন্দ্বের জেরে একই স্কুলের দশম শ্রেণিপড়ুয়া তিন শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করে তারা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারুফ হোসেন বাপ্পী ও নাফিজ মোস্তফা আনছারী নামে দুজন মারা যায়।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কামান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, ২২ মার্চ ক্লাসের বিরতিতে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সৈকত ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারুফের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এরই মধ্যে নবম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী রায়হান এগিয়ে এসে সৈকতের পক্ষ নিয়ে মারুফ ও তার সহপাঠী নাফিজ, সিয়ামসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ায়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। কয়েকজন শিক্ষার্থী এগিয়ে এলে নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে রায়হান দশম শ্রেণির মারুফসহ কয়কেজনকে হুমকি দেয়।

এ ঘটনার চার দিন আগে (১৯ মার্চ) সকালে মারুফের বন্ধু সিয়াম ও রায়হানের মধ্যে তর্কবিতর্কের ঘটনা ঘটে। তাদের মধ্যে পূর্বশত্রুতা ছিল। পরে আগের ঘটনার জের ধরে রায়হান ও তার সহপাঠীরা প্রতিশোধের প্রস্তুতি নেয়। দুই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘটনার দিন স্কুল ছুটির পরপর রায়হান তার দলবল নিয়ে মারুফতার সহপাঠীদের পিছু নিতে থাকে।  মারুফ, সিয়াম, নাফিজসহ অন্যরা পাংগাশিয়া ব্রিজের কাছে গেলে রায়হানের নেতৃত্বে ব্রিজের ওপর আগে থেকে ওত পেতে থাকা সাইদুর ওরফে সৈকত, হাসিব ওরফে হৃদয়, নাঈম হোসেন, সিফাত এবং মশিউর মিলে মারুফ, নাফিজসহ অন্যদের মারধর শুরু করে।

এরপর রায়হান ছুরি নিয়ে এলোপাতাড়ি সিয়াম, মারুফ ও নাফিজকে ছুরিকাঘাত করতে থাকে। রায়হানের ছুরিকাঘাতের ফলে তারা মারাত্মকভাবে আহত হয়। পরবর্তীতে সিয়াম, নাফিজ ও মারুফকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মারুফ ও নাফিজকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে নিলে চিকিৎসক মারুফ ও নাফিজকে মৃত ঘোষণা করেন।

কমান্ডার মঈন বলেন, রায়হান ওরফে রিমন ও হাসিবুল ওরফে হৃদয় স্থানীয় স্কুলটির নবম শ্রেণির ছাত্র। বাউফল উপজেলার পাংগাশিয়া এলাকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য গ্যাং তৈরি করে। তারা সব সময় ছুরি, চাকুসহ বিভিন্ন অস্ত্র বহন করতো। এলাকায় মারামারিসহ বিভিন্ন ঘটনায় তারা জড়িত ছিল। এলাকায় উঠতি বয়সী কিশোরদরে নিয়ন্ত্রণ ও বিভিন্ন অপরাধের উৎসাহ দিতো। গ্রেফতার হাসিবুল এলাকায় বিভিন্ন সময়ে মারামারিসহ বিভিন্ন অপরাধে রায়হান জড়িত থাকত।