৩০ টাকার বাসভাড়া নেওয়া হচ্ছে ১০০ টাকা

ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে চলছে বাসভাড়ার নৈরাজ্য। যেখানে ভাড়া নেওয়ার কথা ৩০ টাকা, সেখানে চাওয়া হচ্ছে ১০০ টাকা। গেট বন্ধ করে ওঠানো হচ্ছে বাড়তি ভাড়া দিতে রাজি হওয়া যাত্রীদের। অন্যথায় নিচ্ছে না কাউকেই। প্রায় সব যাত্রীই ঈদে বাড়ি যাবেন বলে বাধ্য হয়েই দিচ্ছেন এই বাড়তি টাকা।

বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর প্রত্যেকটা রুটের বাসভাড়ায় এরকম নৈরাজ্য দেখা গেছে। মিরপুরে যেখান থেকেই যাত্রীরা ওঠেন না কেন, গুলিস্তান যেতে হলে দিতে হবে ১০০ টাকা। সাধারণ দিনে এই পথের ভাড়া ৩০ টাকা। এছাড়া গুলিস্তান পার হলে স্টেশনপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকাও বেশি দাবি করছেন বাস কন্ডাকটররা। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উত্তরা থেকে সায়েদাবাদ যেতেও যাত্রীদের দিতে হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া। সাধারণ দিনে এই রুটে স্থানভেদে ভাড়া ৪০ থেকে ৬০ টাকা। বাড়তি ভাড়া আদায়ের বিষয়ে কন্ডাকটরদের জিজ্ঞাসা করলে যাত্রীদের সঙ্গে করা হচ্ছে দুর্ব্যবহার।

অতিরিক্ত ভাড়া দিতে রাজি না হলে কাউকেও তোলা হচ্ছে না বাসে

এ বিষয়ে বাসচালক ও সহকারীদের সঙ্গে কথা বললে সবাই এক সুরেই বলেন, ঈদ উপলক্ষে এই ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। এটাকে ঈদ বোনাস মনে করছেন তারা।

বাসের হেলপার রাজু বলেন, অন্য সময় তো এরকম সুযোগ হয় না। আর সব যাত্রীই ঈদে বাড়ি যাচ্ছে। ওই আনন্দে কিছু টাকা নিতেই পারি।

বিষয়টি অন্যায় কিনা জানতে চাইলে আরেক বাস কন্ডাকটর আরজু বলেন, ‘আমাদের তো কেউ বোনাস দেয় না। আমরা এমনেই বোনাস নেই।’

তবে বাস শ্রমিকদের এমন আচরণে নিজেদের অসহায় মনে করছেন যাত্রীরা। তারা জানান, এটা বড় ধরনের জুলুম। অথচ দেখার কেউ নেই।

দুই থেকে তিনগুণ ভাড়া দিয়েও বাসে উঠতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে

ঈদ উপলক্ষে গোপালগঞ্জে বাড়ি যাওয়ার জন্য মিরপুর-১০ থেকে সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল যাবেন পোশাকশ্রমিক দীন মোহাম্মদ। ২০ মিনিট দাঁড়িয়ে আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দিনে দুপুরে ডেকে ডেকে এরকম জুলুম করা হচ্ছে। ঠেকানোর কেউ নেই। ২০ টাকা বেশি নিতে পারে। এর জন্য ৭০ টাকা বেশি নিবো! ৭০ টাকা তো আমাদের জন্য কম টাকা না।’

আরাফাত নামে আরেক যাত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষের মনুষ্যত্ব নষ্ট হয়ে গেছে। বিবেক বলতে কিছুই নাই। ৭০ টাকা ভাড়া কেমনে চায় এরা। দেশে সঠিক আইন থাকলে এরকম অন্যায় সহ্য করতে হতো না।

জিম্মি হয়ে আছি, যেতেই হবে, মন্তব্য করে রহমতুল্লাহ মানিক নামে আরেক যাত্রী বলেন, ওরা সবাই একজোট। এই ভাড়া না দিলে তো কেউ যেতে পারবে না। কী আর করার, ঈদে তো বাড়ি যেতে হবে।

ছবি: প্রতিবেদক