সেমাই-দুধের দাম আগের মতোই, বেড়েছে চিনির

ঈদ আয়োজনে সেমাই যেন এক অপরিহার্য খাবারে পরিণত হয়েছে। সেমাই ছাড়া ঈদ যেন পানসে লাগে। তাই ঈদের দিন প্রতি ঘরেই থাকে সেমাইয়ের কোনও না কোনও আয়োজন।

ঈদকে সামনে রেখে বিক্রি বেড়েছে সেমাইয়ের। প্যাকেটজাত সেমাইয়ের সাথে খোলা সেমাইও রাখছে বিক্রেতারা। সেমাইয়ের সাথে অন্যান্য প্রধান অনুষঙ্গ হিসেবে থাকে দুধ এবং চিনি। বাজারে দুধের দাম আগের মতো থাকলেও চিনির দাম বাড়তি।

মিরপুর ১ ও ২ নম্বরের কাঁচা বাজার ও বিভিন্ন দোকান ঘুরে জানা যায় সেমাই, দুধ ও চিনির বর্তমান বাজার পরিস্থিতি।image_6487327(3)

সাধারণ সময়ে যে পরিমাণ সেমাই বিক্রি হয় ঈদের সময় বিক্রি তার দ্বিগুণেরও বেশি, এমনটাই জানান বিক্রেতারা। 

বাজারে রয়েছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সেমাই। বিক্রেতারা জানান, এর মধ্যে বনফুল, রাঁধুনী, প্রিন্স, প্রাণ, কুলসন, কিষোয়ান, ওয়েলফুডের সেমাই বেশি বিক্রি হয়।

মোল্লা স্টোরের বিক্রেতা মুজিবুর রহমান জনি বলেন, লাচ্ছা সেমাই ২০০ গ্রামের প্যাকেটের দাম ৫০ টাকা আর লম্বা সেমাইয়ের দাম ৪৫ টাকা। এক্ষেত্রে আবার বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সেমাই আছে, ব্র্যান্ড অনুযায়ী দাম ৫ টাকা কম বেশি হয়।

এছাড়াও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে খোলা সেমাই। ১ কেজি খোলা লাচ্ছা সেমাইয়ের দাম ১৬০ টাকা থেকে ২০০ টাকা। আর খোলা রঙিন লাচ্ছা সেমাইয়ের দাম ১৮০ টাকা থেকে ২২০ টাকা কেজি। আরও রয়েছে চিকন সেমাই বা লম্বা সেমাই। এর দাম প্রতি কেজি ১০০ থেকে  ১৫০ টাকার মধ্যে।image_6487327(5)

সেলিম ভ্যারাইটিজ স্টোরের বিক্রেতা বলেন, আমরা সব সময় কিন্তু এই খোলা সেমাই বিক্রি করি না। ঈদ আসলেই এই সেমাই উঠাই। কারণ ঈদের সময় অনেক মানুষ আসে এই খোলা সেমাই কিনতে। দেখতে সুন্দর লাগে তাই রঙিন সেমাইটা অনেকেই কিনে।

বাজার করতে আসা জগলু বলেন, সব সময় প্যাকেট লাচ্ছা সেমাই কেনা হয়। এবার মা বলেছেন, রঙিন লাচ্ছা সেমাই কিনতে। তাই খোলা সেমাই কেনা।  আধা কেজি করে রঙিন ও সাদা লাচ্ছা সেমাই কিনলাম। রঙিন লাচ্ছা সেমাই কিনেছি ১৮০ টাকা কেজি আর সাদাটা কিনেছি ১৬০ টাকা কেজি।

বাজারে রয়েছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের গুঁড়ো দুধ। এরমধ্যে ডানো, ডিপ্লোমা, মার্কস ব্রান্ডের দুধের বিক্রি বেশি বলে জানায় বিক্রেতারা।

ডানো, ডিপ্লোমা, মার্কস এসব ব্র্যান্ডের ৫০০ গ্রাম প্যাকেটের গুঁড়া দুধের দাম ৪১০ টাকা আর ১ কেজির প্যাকেটের দাম ৮২০ টাকা। রোজায় বা ঈদ উপলক্ষে গুঁড়ো দুধের কোনও দাম বাড়েনি। স্বাভাবিক সময়ে যা ছিল এখন তেমনই আছে বলে জানান মোল্লা স্টোরের বিক্রেতা।

ঈদে তরল দুধের চাহিদা বেশি থাকে কিন্তু এ সময় এ দুধের সরবরাহ কমে যায় বলে জানায় বিক্রেতারা।image_6487327

তরল দুধের ব্র্যান্ডের মধ্যে মিল্কভিটা ও আড়ং এই দুই ব্র্যান্ডের  তরল দুধই বেশি বিক্রি হয়। দুইটার দাম একই রকম, প্রতি লিটার ৯০ টাকা।  ঈদ উপলক্ষে তরল দুধের দামও বাড়েনি  তবে সরবরাহ কম থাকাতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে জানান বিক্রেতা জনি।

বাজারে দুধের দাম আগের মতো থাকলেও চিনির দামে পরিবর্তন হয়েছে। মিরপুর ১ নম্বর কাঁচা বাজারের সেলিম ভ্যারাইটিস স্টোরের বিক্রেতা জানায়, এক সপ্তাহ  আগেও যে চিনির দাম ছিল ১১৩ টাকা কেজি। আজকে সে চিনির দাম ১২০ টাকা ছুঁয়েছে। আর লাল চিনির কেজি ১৪০ টাকা।

বাজার করতে আসা একজন ক্রেতা লাল এবং সাদা চিনির দাম জিজ্ঞেস করে চলে যান। পরবর্তীতে তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, শুনেছিলাম লাল চিনি নাকি ভালো বেশি আবার পরিমাণেও কম লাগে।  কিন্তু যে দাম শুনলাম এতে তো মনে হচ্ছে ভালো জিনিস আর খাওয়া যাবে না।