বিজিবি ‘ফৌজদারি মামলা করতে পারবে না’ বলা আদেশ প্রত্যাহার

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর পক্ষ থেকে ফৌজদারি মামলা দায়েরের ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেছেন হাইকোর্ট। এর ফলে বিজিবি এখন থেকে মামলা করতে পারবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। তবে বিজিবির মামলা দায়েরের এখতিয়ার নিয়ে জারি করা রুল বহাল রেখেছেন আদালত।

বুধবার (২৪ মে) বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি শাহেদ নুরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।

এর আগে গত ২৪ মে বিজিবি’র পক্ষ থেকে ফৌজদারি মামলা দায়েরের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এই বাহিনী থেকে মামলা দায়েরের ওপর স্থগিতাদেশ দেন আদালত। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন কেন বাতিল করা হবে না– তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। আগামী ১৪ জুন এই রুলের ওপর শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়।

বিজিবির দায়ের করা এক মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আসামির করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি শাহেদ নুরউদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী বলেন, বিজিবি সদস্যের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের নিয়ে আইনগত প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট মামলার কার্যক্রমও স্থগিত করেছেন আদালত। এই আইনগত প্রশ্ন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিজিবির সদস্যদের বাদী হয়ে ফৌজদারি মামলা করার সুযোগ আপাতত নাই। 

প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২২ সালে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পণ্য আটক করে বিজিবি। ওই ঘটনায় একইদিন বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫(বি) ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে চোরাচালানের অভিযোগ এনে কসবার আখাউড়া রেলওয়ে থানায় মামলা করে বিজিবি। এই মামলার তদন্ত শেষে চার্জশিট দেয় পুলিশ। চার্জশিট আমলে নেনে আদালত। একইসঙ্গে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালত। পরে ওই অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন আসামি কামরুজ্জামান খান।

ওই আবেদনের শুনানিতে ফৌজদারি মামলা দায়ের করার বিজিবি’র আইনগত এখতিয়ার রয়েছে কিনা, তা নিয়ে আলোচনা হয়। এক পর্যায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী আদালতকে বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৪ ধারা অনুযায়ী যে কেউ মামলা দায়ের করতে পারেন। সেক্ষেত্রে বিজিবিও এর বাইরে নয়।

তখন আদালত বলেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইনের কোথাও বিজিবিকে মামলা দায়েরের ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়টি দেখতে পাওয়া গেল না। পরে শুনানি শেষে হাইকোর্ট মামলাটিতে রুল জারি করলেন।