জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিদেশিদের কাছে অনেকে আমাদের দেশকে খাটো করছে। রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরকে দোষারোপ করবে— এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিদেশিদের কাছে মিথ্যাচার করে নিজের দেশকে খাটো করা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পরিপন্থি। জাতির পিতার ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে কমিশনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধুকে কারাগারে আটক রাখা হয়। যারা স্বার্থের বশবর্তী হয়ে কাজ করে উশৃংখল জীবনযাপন করে- তারা চরিত্র বদলায়। এরাই বারবার ঘুরেফিরে আসছে। তাদের ভেতর মানুষের জন্য ভালোবাসা নেই। আজকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে গিয়ে আমরা দেখলাম, অনেকেই বঙ্গবন্ধুর নামে স্লোগান দিয়ে লাইন না মেনে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে পুষ্পস্তবক অর্পণ করছে। এরাই বারবার নিজেদের চরিত্র বদলায়। দেশের কোনও খারাপ সময়ে এদের পাওয়া যাবে না। তিনি বলতেন, যেদিকে তাকাই সেদিকে দেখি ঘুষখোর, চাটার দল। তাই সর্বদা তিনি সরকারি কর্মচারীদের সততার সঙ্গে জনগণের সেবা করার আহ্বান জানাতেন।
তিনি বলেন, চে গুয়েভারা কিউবার শিল্পমন্ত্রী ছিলেন। তার কাছে মন্ত্রিত্ব কোনও ব্যাপার ছিল না। তিনি ছিলেন বিপ্লবী। গেটসবার্গ এড্রেসের সময় আব্রাহাম লিংকন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে জনমানুষের অধিকার নিয়ে বলেন। বঙ্গবন্ধুও মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করেছিলেন। তার সময়ই ১৩৯টি দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। তার ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বের কারণেই বহির্বিশ্বের মানুষ বাংলাদেশকে চেনে।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার পর পরিকল্পনা কমিশন গঠন করে কিছু লোক দিয়ে দেশের সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়াস নেন। প্রতি সেক্টরে উন্নয়নের জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেন। দেড় বছর পর পাঁচশালা পরিকল্পনা করেন। ৫ বছর পর বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করেন। ১৯৭২ সালে নতুন পে স্কেল গঠন করেন।
সার্বক্ষণিক সদস্য মো. সেলিম রেজা বলেন, বঙ্গবন্ধু এদেশ স্বাধীন না করলে আমরা কেউ সচিব, জজসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হতে পারতাম না। তার প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার কোনও শেষ নেই। একটি উচ্চবংশীয় পরিবারে বঙ্গবন্ধুর জন্ম। কীভাবে তিনি নেতা হলেন? তার এই জার্নিটা আমাদের জানা প্রয়োজন। অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়লে আমরা জানতে পারবো- তিনি কীভাবে বাংলার প্রতিটি দাবি আদায়ের সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি যে মহান নেতা এতে কোনও দ্বিমত নেই।
সভার শুরুতে জাতির পিতা ও তার পরিবারের সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।