হোটেল শেরাটন পূর্ণাঙ্গ রূপে চালু হচ্ছে

হাইকোর্ট বিভাগের আদেশ অনুযায়ী ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও বোরাক রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের সমঝোতার ভিত্তিতে শেয়ার বণ্টনের চুক্তি সই হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ডিএনসিসি ইউনিক কমপ্লেক্সের (হোটেল শেরাটন) অংশীদারত্ব বুঝে নিয়েছে দুই পক্ষ। হোটেল শেরাটন বাণিজ্যিকভাবে পূর্ণাঙ্গ রূপে চালু হতে আর কোনও বাধা নেই।

সোমবার (১৩ নভেম্বর) ডিএনসিসি কার্যালয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষে মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ও বোরাক রিয়েল এস্টেটের পক্ষে সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহা. নূর আলী সমঝোতা চুক্তিতে সই করেন।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বোরাক রিয়েল এস্টেট।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী ডিএনসিসি তার ন্যায্য হিস্যা বুঝে নিয়েছে। অন্যদিকে বোরাক রিয়েল এস্টেটও নিজ অংশ বুঝে পেয়ে হোটেল শেরাটনের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু করেছে। ফলে হোটেল শেরাটন পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হতে যাচ্ছে।

অন্যদিকে ডিএনসিসিও বুঝে নিয়েছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার সম্পদ ও রাজস্ব আয়। আদালতের নির্দেশ মোতাবেক বনানী ডিসিসি-ইউনিক কমপ্লেক্সের ২০ তলা বা ২০১ ফুট পর্যন্ত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও বোরাক রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের অংশ বুঝে নিয়ে এই চুক্তি হয়।

গত ৯ অক্টোবর দুই পক্ষের উপস্থিতিতে আদালত বিষয়টির নিষ্পত্তির আদেশ দেন। সেই আদেশে বলা হয়েছে, সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ভবনটির ২০১ ফুট উচ্চতা অনুমোদন হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বিভাগ ভবনের ২১ তলা থেকে ২৮ তলা পর্যন্ত স্থিতাবস্থার আদেশ দেয়।

তারও আগে গত ১২ জুন ও ২৯ আগস্ট দেওয়া আদেশ প্রতিপালন করে শেয়ার স্পেস বুঝে নিয়ে চুক্তি সম্পাদন করতে হাইকোর্ট বিভাগ নির্দেশ দেয়। সেই আদেশের ভিত্তিতেই এই শেয়ার বণ্টন চুক্তি সম্পন্ন হয়।

বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ দীর্ঘ শুনানির পর গত ৯ অক্টোবর এ আদেশ দেন।

উল্লেখ্য, ২৮ তলা পর্যন্ত ভবনের উচ্চতার ক্ষেত্রে আইনি কোনও বাঁধা নেই; কারণ তেজগাঁও বিমানবন্দরের উড্ডয়ন কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় ২০০৯ সাল পর্যন্ত বহুতল ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বনানী এলাকায় উচ্চতার কোনও ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারিত ছিল না। আগেই হোটেল শেরাটনের ২৮ তলা ভবনটি নির্মিত হয়। ২৮ তলা ভবনটি ২০১৪ সালের মধ্যেই নির্মাণ সম্পন্ন হয়। এ অবস্থায় কোনও অবস্থানেই বর্তমান উচ্চতার ঊর্ধ্বসীমা আলোচ্য ভবনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। পরে ২০১ ফুটের ঊর্ধ্ব থেকে ২৮ তলা পর্যন্ত উচ্চতার বিষয়টি আদালতে নিষ্পত্তি হওয়া সাপেক্ষে ওই ফ্লোরগুলোর হিস্যা বণ্টনের বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।

বহুতল এ ভবনটি নির্মাণের পর বোরাক রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের পক্ষ থেকে স্পেস বণ্টন সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব ডিএনসিসিকে দেওয়া হয়। পরে সেই প্রস্তাব ডিএনসিসির করপোরেশন সভায় উপস্থাপন করে সংস্থাটির প্রকৌশল বিভাগ। করপোরেশন সভার আলোকে ২০২২ সালের ২৭ নভেম্বর এবং ২০২৩ সালের ৭ জানুয়ারি ডিএনসিসির দ্বিতীয় পরিষদের ১৮ ও ১৯তম সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বোরাক রিয়েল এস্টেট কর্তৃক পেশ করা প্রস্তাব অনুযায়ী ডিএনসিসি বর্ধিত ১৫ তলা থেকে ২৮ তলা পর্যন্ত ভবনের ৩০ শতাংশের পরিবর্তে ৪০ শতাংশ হিস্যা লাভ করবে। নকশা অনুসারে ১৪ তলা পর্যন্ত চুক্তি অনুযায়ী ডিএনসিসি পাবে ৩০ শতাংশ বোরাক রিয়েল এস্টেট পাবে ৭০ শতাংশ এবং ১৫ থেকে ২৮ তলা পর্যন্ত ডিএনসিসি পাবে ৪০ শতাংশ আর বোরাক পাবে ৬০ শতাংশ।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বুয়েট কর্তৃক ৩০ তলার স্ট্রাকচারাল নকশা ভেটিং সাপেক্ষে একই বছরের ২৫ জুন ঢাকা সিটি করপোরেশনের তৎকালীন অথরাইজড অফিসার (প্রধান প্রকৌশলী) কর্তৃক ৩০ তলা ভবনের নকশা অনুমোদন দেওয়া হয়।