জালিয়াতির অভিযোগ

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন

সম্প্রতি শেষ হয়েছে প্রাইমারি সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা। এই পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে নানা বিতর্কের। প্রথম ধাপের পরীক্ষায় দেড় লাখেরও বেশি প্রার্থী অংশ নিতে পারেননি বলে দাবি করেছেন প্রার্থীদের একটি অংশ। একইসঙ্গে ব্যাপক অনিয়ম-জালিয়াতির অভিযোগ তুলে পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন তারা।

সোমবার (১১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দাবি আদায়ে মানববন্ধন করেন তারা। এতে দেড় শতাধিক প্রার্থী অংশ নেন।

আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বরিশাল বিভাগের প্রার্থী ফাতেমা আক্তার সাথী মানববন্ধনে বলেন, কয়েক দফা পিছিয়ে হরতাল-অবরোধের মধ্যে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। অথচ একই কারণে বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানো হয়েছে। সমন্বিত ৭ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষাও পেছানো হয়।IMG_20231211_163225(1)

তিনি বলেন, তড়িঘড়ি পরীক্ষা নেওয়ায় অনেক প্রার্থী প্রবেশপত্র ডাউনলোডের এসএমএসও পাননি। প্রবেশপত্র তুলতে না পেরে অনেকে পরীক্ষার হলে ঢুকতে পারেননি। আবার পরীক্ষায় প্রক্সিসহ ব্যাপক অনিয়ম-জালিয়াতি হয়েছে। পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই প্রশ্নপত্র বাইরে চলে গেছে। এটা গণমাধ্যমেই প্রকাশিত হয়েছে। এটা আমরা মেনে নিতে পারি না। আমরা আইনগতভাবে এ পরীক্ষা বাতিলের জন্য হাইকোর্টে রিট করবো।

ফাতেমা বলেন, গত ৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপের পরীক্ষায় মোট প্রার্থী ছিল ৩ লাখ ৬০ হাজার ৬৯৭ জন। হরতাল, অবরোধ ও বৈরী আবহাওয়াজনিত সমস্যার কারণে দূরপাল্লার গাড়ি, রেলের টিকিট না পাওয়ায় ১ লাখ ৫৮ হাজার পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি।

তিনি আরও বলেন, তাছাড়া বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত খবরের তথ্যানুযায়ী- পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রশ্নফাঁস, উত্তরপত্র জালিয়াতি ও বিভিন্ন ডিভাইস ব্যবহার করে জালিয়াত চক্র। এতে নিয়োগ পরীক্ষায় চরম অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। সার্বিক বিষয়গুলো বিবেচনা করে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের প্রথম ধাপের পরীক্ষা বাতিল করে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরীক্ষা নেওয়ার অনুরোধ জানান তারা।

উল্লেখ্য, গত ৮ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের ১৮ জেলায় একযোগে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। প্রথম ধাপের এ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে আবেদন করেছিলেন ৩ লাখ ৬০ হাজার ৬৯৭ জন চাকরিপ্রার্থী। তবে কতজন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন, তা এখনও জানায়নি অধিদফতর।

এসময় মানববন্ধন থেকে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৫ দফা দাবি পেশ করা হয়। তাদের দাবিগুলো হলো:

১ম পর্বের ৩ বিভাগের ১৮ জেলার পরীক্ষা বাতিল; নির্বাচনের পর সুষ্ঠু ও কঠোর নিরাপত্তায় পরীক্ষা গ্রহণ; ডিভাইস ও অবৈধচুক্তি-মুক্ত পরীক্ষা; জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকলের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া; এবং জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া।

ফাতিমা আখতার সাথীর সভাপতিত্বে ও হারুন উর রশিদের সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রথম ধাপের প্রাইমারি সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার শিক্ষার্থী মো. আবু সালেহ খান, আকাশ রয়, আনোয়ার খান প্রমুখ।