সাগর-রুনি হত্যা: এক যুগেও তদন্তে অগ্রগতি না হওয়ায় আইন ও সালিশ কেন্দ্রের উদ্বেগ

সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের এক যুগেও তদন্তে অগ্রগতি না হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র। আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের প্রায় ১২ বছর পার হয়ে গেলেও এর তদন্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করতে পারেনি। আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের একটি ফ্ল্যাটে মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের সময় ফ্ল্যাটটিতে উপস্থিত ছিলেন তাদের ৫ বছর বয়সী একমাত্র পুত্র মাহির সারোয়ার মেঘ। সাগর-রুনি দম্পতির হত্যাকাণ্ডের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তৎকালীন সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে দ্রুততার সঙ্গে অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা বলা হলেও তার বাস্তবায়ন ঘটেনি। গত ১২ বছরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ১০৫ বার আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তারিখ পিছিয়েছেন। হত্যা মামলার তদন্ত শেষ করতে বিলম্ব করায় ইতোমধ্যে দুটি পৃথক আদালত অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। এ হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই ন্যায়বিচার আদায়ে সোচ্চার রয়েছেন তাদের সহকর্মীরা। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পরও এক্ষেত্রে কোনও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না ঘটায় নাগরিক সমাজ হতাশ ও ক্ষুব্ধ।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) আশঙ্কা এ পরিস্থিতি বিচারহীনতার সংস্কৃতির যে ধারণা তা জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। আসক এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দ্রুততার সঙ্গে শনাক্ত করে সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার সাপেক্ষে প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছে। পাশাপাশি, বিচারের দীর্ঘসূত্রিতার কারণে কোনও নিরপরাধ ব্যক্তিকে যেন দুর্ভোগ পোহাতে না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক থাকার আন্তরিক আহ্বান জানাচ্ছে।

এ বিষয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) নির্বাহী পরিচালক ফারুখ ফয়সল সংবাদপত্রে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেছেন, এই ধরনের ব্যর্থতা বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় প্রশাসনের ব্যর্থতারই পরিচায়ক।