সাত বছর আগে ঢাকার কেরানীগঞ্জে বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে মফিজুর রহমান নামে এক কবিরাজকে ১০ টুকরো করে খুনের দায়ে দেবর ও ভাবিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসরাত জাহান মুন্নী এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো– মাকসুদা আক্তার লাকী (৩২) ও তার দেবর সালাউদ্দিন (৩০)। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। আসামিরা পলাতক। আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জের তারানগর ইউনিয়নের বেউতা গণকবরস্থানের সামনের ডোবা থেকে হাত, পা ও মাথাবিহীন মানুষের কোমর থেকে গলা পর্যন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এসএম মেহেদী হাসান ২ জানুয়ারি মামলা দায়ের করেন।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। সার, কীটনাশকের দোকানও ছিল। পাশাপাশি তিনি কবিরাজী করতেন। আসামি লাকীর স্বামী বিদেশে থাকেন। তাদের একটা ছেলে সন্তান রয়েছে। অধিক সন্তানের আশায় তিনি কবিরাজের কাছে যান। যাতায়াতের মধ্যে দেবরের সঙ্গে লাকীর বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি কবিরাজ জেনে গেলে আসামিরা তাকে খুনের পরিকল্পনা করে। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর ভুক্তভোগীকে লাকীর বাসায় দাওয়াত করে। মফিজুর রহমান তার বাসায় যান। গরুর মাংস, চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তাকে অজ্ঞান করা হয়। পরে তার দেহকে ১০ টুকরা করে এখানে সেখানে ফেলা হয়। এরপর মফিজুর রহমান নিখোঁজের ঘটনায় তার ভাই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পুলিশ তদন্তে সন্দেহভাজন হিসেবে তাদের নাম আসে। তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তারা হত্যার দায় স্বীকার করে। মফিজুরের দেহের টুকরোগুলো উদ্ধার করা হয়।
মামলাটি তদন্ত করে ওই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর দুই জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা জেলার (দক্ষিণ) গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক নাজমুল হাসান। ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। বিচার চলাকালে আদালত ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
এদিকে দুই আসামি জামিনে গিয়ে ২০২৩ সালে পলাতক হন।