শ্লীলতাহানির অভিযোগে বিএসএমএমইউ-এর অধ্যাপকের বিরুদ্ধে নারী সহকর্মীর মামলা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) কর্মরত নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহ সবুজের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে শাহবাগ থানায় মামলা করেছেন আরেক সহকর্মী মনোরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় মামলা দায়ের করেন।

ডিএমপির শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তাজিরুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিএসএমএমইউ’র নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহ সবুজের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে মামলা করেছেন আরেক সহকর্মী চিকিৎসক। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে আসামিকে আইনের আওতায় আনা হবে।

এজাহারে ভুক্তভোগী ওই নারী চিকিৎসক উল্লেখ করেছেন, ডা. শহীদুল্লাহ সবুজ বিভিন্ন সময় তাকে রুমে ডাকতেন এবং বিভিন্ন অশ্লীল ও আপত্তিকর প্রস্তাব দিতেন। পাশাপাশি আসামি চিকিৎসক একটি হাসপাতাল করবেন এবং ভুক্তভোগীকে ওই হাসপাতালের অংশীদার করবেন বলেও জানান। আরেকদিন তার রুমে ডাকলে ভুক্তভোগী গেলে ওই রুমে কেউ না থাকায় তাকে জড়িয়ে ধরে ছবি তুলে রাখে ডা. শহীদুল্লাহ। এই ছবি দিয়ে নিয়মিত ভুক্তভোগীকে হুমকি দিতেন। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী হাসপাতালের জন্য ডা. শহীদুল্লাহকে দুই দফায় ২০ লাখ টাকাও দেয়। গত ২৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বি-ব্লকের অ্যালামনাই রুমে ডা. শহীদুল্লাহ’র সঙ্গে ভুক্তভোগীর দেখা হলে তাকে একা পেয়ে জোর করে জড়িয়ে ধরে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। পরে ভুক্তভোগী বাঁচার চেষ্টা করলে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে জখম করে।

ভুক্তভোগী ওই নারী চিকিৎসক বলেন, ‘আমি তিন বছর ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক মনোরোগ বিভাগ হিসেবে কর্মরত। ডা. শহীদুল্লাহ বিভিন্ন সময় রুমে ডেকে আপত্তিকর প্রস্তাব দিতেন। তিনি আমার সিনিয়র, তাই চাকরির নিরাপত্তার স্বার্থে আমি শুরুতে কিছুই জানাইনি। তারপরও তিনি আমাকে বিভিন্ন কাজের অজুহাতে তিনি যখন রুমে একা থাকতেন, আমাকে তার রুমে আসার জন্য ডাকতেন। আর প্রায় দিনই আমি এড়িয়ে যেতাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার সঙ্গে তোলা ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও পরিবারের কাছে ছড়িয়ে দেবেন বলেও হুমকি দিতেন তিনি। আমি সামাজিক মানসম্মানের ভয়ে তাৎক্ষণিক চুপ থাকি। গত ২৫ জানুয়ারির ঘটনার পর বিষয়টি আমি পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে থানায় মামলা করি। এরই মাঝে আমার নামে আমার পরিবারের কাছেও ডা. শহীদুল্লাহ নানান অপপ্রচার করে। আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আমার সাথে যা হয়েছে আমি মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত। আমি সুষ্ঠু বিচার চাই।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহ সবুজের দুটি মোবাইল নম্বরে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এরমধ্যে একটি নম্বরে ফোন দিলে ‘ব্যস্ত’ দেখাচ্ছে, আরেকটিতে ফোন দিলে কেটে দিয়েছেন।