বসন্ত-ভালোবাসা দিবস আর সরস্বতী পূজা মিলেমিশে একাকার

বাংলাদেশের মানুষ সব সময়ই উৎসব প্রিয়। যেকোনও উৎসবকে ঘটা করে উদযাপন করা যেন এ দেশের মানুষের চিরায়ত রীতি। এ বছর বসন্ত উৎসব, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও সরস্বতী পূজা উদযাপন করা হচ্ছে একই দিনে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের মাঠে মোট ৭২টি মণ্ডপে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হচ্ছে সরস্বতী পূজা।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় পূজা শুরু হয়। এরপর বেলা ১১টা পর্যন্ত হয় পুষ্পাঞ্জলি। পরে শুরু হয় শিশু হাতেখড়ি উৎসব। এবার বসন্ত, ভালোবাসা দিবস আর সরস্বতী পূজা উপলক্ষে সকাল ৯টা থেকে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জগন্নাথ হলে আসতে শুরু করেন উৎসব প্রিয় মানুষেরা।

বসন্ত উৎসব, বিশ্ব ভালোবাসা দিসব ও সরস্বতী পূজা উদযাপন করা হচ্ছে একই দিনে। ছবি: আবিদ হাসান

বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণে নামে উৎসব প্রিয় মানুষের ঢল। নানান সাজে নিজেদের রাঙিয়ে ঘুরতে এসেছেন সবাই। কেউ কেউ পরেছেন বাসন্তী রঙের শাড়ি-পাঞ্জাবি। কেউ সেজেছেন ভালোবাসার লাল রঙে। আবার কেউ কেউ পরেছেন সরস্বতী পূজার সাজ সাদা জমিন আর লাল পাড়ের শাড়ি। কেউ স্মৃতি ধরে রাখতে ব্যস্ত ক্যামেরায়, শিশুরা দুলছে নাগোর দোলায়। আবার কেউ কেউ মেতেছেন খোশগল্পে।

নারী-পুরুষ, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বয়সভেদে সবাই মেতেছেন জগন্নাথ হল মাঠের উৎসবে। হলের শিক্ষার্থীদের আয়োজনে সবার জন্য রয়েছে আপ্যায়নের ব্যবস্থা। এই উৎসবকে ঘিরে হলের মাঠে বসেছে নানা ফুল, টিপ-চুড়ি ও খাবারের দোকান। এ সব দোকানে ব্যবসাও ভালো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দোকানিরা।

সরস্বতী পূজা। ছবি: সাজ্জাদ হোসেন

রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রিয় মানুষ, অভিভাবকদের সঙ্গে ঘুরতে এসেছেন অনেকেই। আবার বাবা-মায়ের হাত ধরে এসেছেন ছোটরাও। সকালে মেট্রোরেলে উত্তরা থেকে এসেছেন শাহেদ শাহরিয়ার। ছুটির দিনে প্রিয় মানুষের সঙ্গে সময় কাটাতে এসে ভালোই লাগছে বলে জানান তিনি।

প্রিয়জনসহ পূজায় ঘুরতে এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুজাক্কির রিফাত। তিনি বলেন, ‘সরস্বতী জ্ঞানের দেবী, সংগীতের দেবী। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজার শুভেচ্ছা। অন্য যেকোনও বারের চেয়ে এবারের দিনটি স্পেশাল। কারণ একসঙ্গে তিন দিবস উদযাপন করা হচ্ছে।’

উৎসবকে ঘিরে বসেছে ফুলসহ বিভিন্ন পণ্যের দোকান। ছবি: নাসিরুল ইসলাম

পূজায় বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে আসা শ্রাবন্তী সাহা বলেন, ‘দেবীর আরাধনায় সকাল থেকেই আমরা আছি। দেবীর কাছে আমাদের প্রার্থনা, সবাইকে উপকারী জ্ঞান দিয়ে অসাম্প্রদায়িক ও যুদ্ধমুক্ত সম্প্রীতির বিশ্ব গঠনে সহায়তা দিন।’