‘স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র হলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরবে’

পশ্চিমা বিশ্ব একযোগে হামাসকে আক্রমণকারী বা সন্ত্রাসী বলে অভিযুক্ত করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পক্ষে প্রকাশ্যে সমর্থন জানায়। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের ওপর যে ঐতিহাসিক অবিচার, যে কারণে ফিলিস্তিনিরা আক্রমণ চালাচ্ছে, সে বিষয়ে তারা সম্পূর্ণ নীরব। আমরা মনে করি, যতো দ্রুত স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র নির্মিত হবে ততো দ্রুত মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরবে।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত, গাজার চলমান গণহত্যা ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ’৭১ এ আয়োজন করে।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ফিলিস্তিনিদের পুরোপুরি নিধনের লক্ষ্যে পরিকল্পিত সামরিক অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল। গাজা ভূখণ্ডে তারা খাদ্যদ্রব্যসহ সব ধরনের সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। গাজায় এখন দুর্ভিক্ষ চলছে। গাজাবাসীর এক তৃতীয়াংশ জনগণ এই দুর্ভিক্ষের শিকার। বিগত ছয় মাসে একদিকে চলছে নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের হত্যার মহোৎসব, অন্যদিকে পরিকল্পিতভাবে খাদ্যের অভাব, যা বাকিদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। সর্বশেষ হিসাব মতে, ইসরায়েলি আগ্রাসনে ৩০ হাজার ফিলিস্তিনি মারা গেছে। তাদের বেশির ভাগই সাধারণ বেসামরিক মানুষ।

সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মোহাম্মদ সামাদ বলেন, ‘আজ ফিলিস্তিন ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপজুড়ে এতো মিছিল হচ্ছে, কিন্তু সেটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কানেই তুলছে না। যদি ফিলিস্তিন ও ইসরাইল দুটি রাষ্ট্র হতো তাহলে এই সমস্যা অনেকটাই সমাধান হতো।’

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সারওয়ার আলী বলেন, ‘গণহত্যার সংজ্ঞা হলো, কোনও জাতি বা গোষ্ঠীকে পুরো দমে নির্মূল করে দেওয়া। আজ ফিলিস্তিনরা আপন দেশে আপন রাষ্ট্রভূমি থেকে উৎখাত হচ্ছে। তারা নিজ দেশে উদ্বাস্তু হয়ে জীবনযাপন করছে। তাদের অবস্থানটাকে আরও সংকুচিত করার জন্য এই আক্রমণ এখনও চলছে। এর চেয়ে নির্মম হত্যাকাণ্ড আর হয় না। আজ বিশ্বের বিবেককে জাগ্রত করা প্রয়োজন। এই চেষ্টা আমাদের করতে হবে।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্টস কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মান্নান বলেন, ‘বিশ্বে এখন লাইভ গণহত্যা হচ্ছে, যেটা হচ্ছে ফিলিস্তিনে।’

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবীব। সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের কার্যনির্বাহী সভাপতি বীর মুক্তিযাদ্ধা মো. নূরুল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও ছিলেন– সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড. আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মাবুদ প্রমুখ।