বইমেলা শেষ, কবে স্বরূপে ফিরবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান?

দূষণ ও অট্টালিকার শহর রাজধানী ঢাকা। সাধারণ মানুষের ঘুরে বেড়ানোর, খেলাধুলা করার জন্য, একটু প্রাণ খুলে শ্বাস নেওয়ার জায়গা খুবই সীমিত। অল্প যে কয়টি খোলা জায়গা বা উদ্যান রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। প্রতিবছর ভাষা শহীদদের স্মরণে আয়োজিত বইমেলা অনুষ্ঠিত হয় এখানে। কিন্তু সবুজ ঘাসে ঢাকা এই প্রাঙ্গণ বইমেলার ধকল সইতে না পেরে এক মাসে হয়ে যায় বিবর্ণ, প্রাণহীন; পরিণত হয় আবর্জনার স্তূপে।

এবারের বইমেলা শেষ হয়েছে গত শনিবার (২ মার্চ)। এরপর কেটে গেছে পাঁচ দিন। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন স্টল-প্যাভিলিয়নে ব্যবহৃত বাঁশ, কাঠ খুলে রাখা হয়েছে। পিকআপ ভ্যানে করে এগুলো সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। তবে মেলার স্টলগুলোর ফ্লোরে ব্যবহৃত ইট সরানোর কাজ এখনও শেষ হয়নি। এছাড়া প্লাস্টিক বর্জ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে যেখানে সেখানে। বাঁশগুলোতে যেসব পেরেক মারা হয়েছিল, খোলার পর সেসব পেরেক ও লোহা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মাঠের ওপর। মরা ঘাসের কারণে খুব একটা চোখে পড়ে না সেগুলো, অসতর্ক হলেই বিঁধে যেতে পারে পায়ে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের লেকে ভাসছে বই মেলার ফুডস্টলের আবর্জনা (ছবি: প্রতিবেদক)

মেলা উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের লেকের পাশে বসেছিল দুটি কফি শপ। কপি শপের আবর্জনা পড়ে আছে লেকের পানিতে। এর ফলে পানিতে জমেছে শ্যাওলা। কিন্তু অন্য দিকের পানি স্বচ্ছ।

মেলার শিশু চত্বর অংশের এখন বাঁশ খোলা হয়নি। একদল লোক বাঁশ খোলা কাজ করছেন, তারা জানিয়েছেন বিকাল নাগাদ শেষ হতে পারে কাজ। ইট সরানোর শ্রমিকরাও একই কথা জানান।

বইমেলার সব সরঞ্জাম সরিয়ে নিতে আরও সময় লাগবে বলছেন সংশ্লিষ্টরা (ছবি: প্রতিবেদন)

বাংলা একাডেমির ভেতরের দৃশ্যও একই। তবে সেখানে কাজ করা শ্রমিকরা জানান, আরও ১০-১৫ দিন সময় লাগবে সবকিছু ঠিক হতে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মাঠ পরিষ্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব কেএম মুজাহিদুল ইসলাম বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, এটা আপনারা কেন এত আমলে নিচ্ছেন! এটা কবে ঠিক হবে, সেটা তো আমরা নিজেদের মতো করে করে ফেলবো। এটা তো বইমেলা সংশ্লিষ্ট কিছু না।

স্টলগুলোর মেঝে তৈরির জন্য আনা ইট এখনও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে (ছবি: প্রতিবেদক)

তিনি আরও বলেন, এখানে ২৯টি প্রতিষ্ঠান এর সঙ্গে সম্পর্কিত। আমি ইট এনেছি টাঙ্গাইল থেকে, তারা ইটগুলো খুলতেছে। তারা কাজ করছে রাত-দিন। রাত ১০টা পর্যন্ত তারা খোলার চেষ্টা করে। কোথাও কেউ বসে নাই। গতবার এক মাস পর্যন্ত এভাবে পড়েছিল। এখন আপনারা বলতেছেন মাঠ কবে ঠিক হবে! ১১ লক্ষ বর্গফুট জায়গা ঠিক করতে সময় তো লাগবে।

এখনও চলছে বইমেলার স্টল খোলার কাজ (ছবি: প্রতিবেদক)