নারী দিবসের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্বলন

‘নারীর সম-অধিকার, সমসুযোগ এগিয়ে নিতে হোক বিনিয়োগ’ এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে শুক্রবার (৮ মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা ও মোমবাতি প্রজ্বলন করেছেন নারীরা।

‘আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট’-এর আয়োজনে ও ডায়াকোনিয়ার সহযোগিতায় ১৫তম বারের মতো এ আয়োজন করা হয়।

নারীর জন্য প্রতিটি মুহূর্তকে নিরাপদ করতে ও নারীর জীবন বদলের লক্ষ্যে রাত ১২টা ১ মিনিটে নারী নির্যাতন দূর করতে মোমবাতি প্রজ্বলন করা হয়। এ সময় নারীদের অধিকার বিষয়ে সচেতন করতে শপথও নেন সবাই।

এ সময় বক্তারা সব ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমঅংশীদারত্ব নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি নারীর জন্য প্রতিটি স্থান, সময় ও প্রতিটি মুহূর্তকে নিরাপদ করার জোরালো দাবি জানান।

নারীদের অধিকার বিষয়ে সচেতন করতে শপথও নেন সবাই

আমরাই পারি জোটের প্রধান নির্বাহী জিনাত আরা হকের সঞ্চালনায় আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জোবাইদা নাসরীন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট ড. ফারহানা বেগম, কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট ড. গাউসিয়া ওয়াহিদুন্নো চৌধুরী, এমবি আখতারসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের নারী শিক্ষার্থী, তৃতীয় লিঙ্গের সদস্য ও নানান শ্রেণি-পেশার নারীরা।

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরিন বলেন, ‘সমতল থেকে পাহাড় কোনও জায়গায় আমরা নারী নির্যাতন হতে দেবো না। আমাদের এ স্বপ্নটা দেখতে হবে, একদিন আমি কোনও ধরনের চিন্তাভাবনা না করেই এ রাস্তা দিয়ে রাত ১২টার সময়ে হেঁটে যাবো।

আমরাই পারি জোটের কো-চেয়ারম্যান শাহিন আনাম বলেন, ‘গত এক বছরে ১৬০০-এর বেশি নারী সহিংসতার শিকার হয়েছে। তার মধ্যে ৬০ জনকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে। ৩০ জনকে ধর্ষণের পর মেরে ফেলা হয়েছে। আমাদের এখানে এখনও বাল্যবিবাহের হার উপমহাদেশে সবচেয়ে বেশি। সরকারের এত উদ্যোগ, সকলের এত প্রয়াস থাকা সত্ত্বেও আমরা নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ করতে পারছি না। এর কারণ নারীর প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি এখনও তেমন পরিবর্তন হয়নি। পরিবর্তন তখনই আসবে যখন আমরা নারী-পুরুষ একসঙ্গে কাজ করবো, সমাজকে বোঝাবো নারী-পুরুষের সমতা দেশের জন্য কল্যাণকর।’

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন বলেন, ‘নারী দিবসে এ অবস্থান কিন্তু পুরুষের বিরুদ্ধে নয়। বরং পুরুষতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে। পুরুষরাও কিন্তু এ পুরুষতান্ত্রিকতার শিকার এবং যে কারণে আমাদের নারী-পুরুষসহ সকল লিঙ্গের প্রতিপক্ষ হোক পুরুষতন্ত্র।’