তরুণদের বেকারত্ব কমাতে অবৈধ বিদেশিদের ফেরত পাঠানোর পরামর্শ

তরুণদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব কমাতে অবৈধ বিদেশিদের ফেরত পাঠাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন গবেষক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফেরদৌস আজিজ (অব.)। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদের কনফারেন্স কক্ষে ‘অবৈধ বিদেশি খেদাও আন্দোলন’ আয়োজিত ‘তরুণদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব এবং অবৈধ বিদেশিদের প্রভাব’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

কর্নেল ফেরদৌস আজিজ (অব.) বলেন, সংবিধানের ২৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যোগ্যতা অনুসারে নিয়োগ লাভের অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে গণ্য করা হয়েছে এবং অনুচ্ছেদ ১৯ অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের সমান অধিকার লাভের সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। তবে গত দেড় দশকে বাংলাদেশে বেকার সমস্যা চরম আকার ধারণ করেছে। বিভিন্ন পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশে বর্তমানে বেকারত্বের হার ১২ শতাংশ, যা এ যাবত কালের সর্বোচ্চ।

তিনি আরও বলেন, বেকারত্বের সমস্যা এমন চরম আকার ধারণ করেছে যে এদেশে নাগরিক কর্মসংস্থান খুঁজতে গিয়ে বঙ্গোপসাগর থেকে ভূমধ্যসাগরে মৃত্যুবরণ করছে। অন্যদিকে বাংলাদেশে গত দেড় দশকে বহু অবৈধ বিদেশি কর্মক্ষেত্র দখল করে রেখেছে। পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশে ১০ লাখের অধিক বেশি শ্রমিক ও কর্মচারী বাংলাদেশে বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে নিয়োজিত রয়েছে। ফলে এদেশের নাগরিকরা যোগ্যতা অনুযায়ী নিয়োগ লাভের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এসময় মেজর মুজিবুল হক (অব.) সভাপতিত্বে ও ব্যারিস্টার মেজর অবসরপ্রাপ্ত এম সরোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট মো. মহসিন রশিদ, ব্যারিস্টার মেজর অবসরপ্রাপ্ত এম সরোয়ার হোসেন। উপস্থিত ছিলেন আব্দুর রহিম, মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, নুরুল হুদা চৌধুরী মিলু, মেজর মো. ইমরান (অব.) প্রমুখ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও বৈঠকে অংশ নেন।

অ্যাডভোকেট মো. মহসিন রশিদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ফুলের ব্যবসা থেকে শুরু করে বিভিন্ন কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ পদে ভারত থেকে আসা ব্যক্তিরা ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া কাজ করছে।চীনা অনেক নাগরিকও অবৈধভাবে বাংলাদেশে কাজ করছেন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ব্যক্তিরা বিষয়গুলো জেনেও অজ্ঞাত কারণেই নিশ্চুপ।

মেজর মুজিবুল হক (অব.) বলেন, ২০২০ সালে বাংলাদেশের রেমিটেন্স এসেছে ১৮.৫ বিলিয়ন ডলার। অপরদিকে অবৈধ বিদেশিরা নিয়ে গেছে ১০.২ বিলিয়ন। অবৈধ হওয়ার কারণে তারা ট্যাক্স ও ভ্যাট না দিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা নিয়ে যাচ্ছে।  ফলে একদিকে বাংলাদেশের অর্থনীতি ভঙ্গুর হয়ে পড়ছে, অন্যদিকে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, মানবাধিকার ও জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।