ভাটারায় কেন গোলাগুলি-অস্ত্রের মহড়া, জানালেন ডিবি’র হারুন

রাজধানীর ভাটারা থানার জোয়ারসাহারা এলাকায় চালকের পায়ে গুলি ও অস্ত্রের মহড়ার ঘটনায় সাত জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) উত্তরা বিভাগ। ডিওএইচএস সোসাইটির রিকশার নম্বর প্লেটকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি’র ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, তুচ্ছ ঘটনায় অস্ত্রের মহড়া ও গোলাগুলির নেপথ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার এবং মাদক ও চাঁদাবাজিসহ অবৈধ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের বিরোধ রয়েছে। চালককে গুলির ঘটনায় দায়ের করা মামলা ছায়া তদন্তে নেমে সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়। রাজধানীসহ গাজীপুর, মাদারীপুর, দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন স্থনে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতাররা হলেন– রাশেদুজ্জামান খান রাজু (৩৫), রকিব হোসেন মুন্না (৩২), মো. শারিকুল ইসলাম খান (৪৫), মো. আজিম পাটোয়ারী (৩৪), মো. মাহবুব খান (৩৫), শরীফ খান (৩৩) ও মো. সোহরাব খান (৩৩)। 

রবিবার (২৪ মার্চ) রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, গত ১৮ মার্চ রাজধানীর ভাটারা থানার জোয়ারসাহারা এলাকায় ডিওএইচএস সোসাইটির রিকশার নম্বর প্লেটকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বের জেরে গোলাগুলি হয়। ঘটনার সময়ে গ্রেফতার রাজু ফাঁকা গুলি ছোড়ে। তার সহযোগী মুন্না রিকশাচালক রুবেলকে গুলি করলে তার ডান পায়ে লাগে। এরপরই আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়। পরে অস্ত্র উদ্ধার করতে মাঠে নামে গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগ।

ভাটারায় গুলির ঘটনায় গ্রেফতার ব্যক্তিরা

এ সময় তাদের কাছ থেকে মহড়ার ঘটনায় ব্যবহৃত দুটি বিদেশি পিস্তল, একটি বিদেশি রিভলবার, একটি বিদেশি শর্টগান, ভাঙা রিভলবার, ভাঙা ৯এমএম পিস্তল, ৭৫ রাউন্ড গুলি, দুটি শর্টগানের কার্তুজ, ২১০ রাউন্ড গুলির খোসা, পাঁচটি পুরাতন ম্যাগাজিন, ৪০ গ্রাম গান পাউডারের বারুদ ও বিভিন্ন অস্ত্রের ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, গ্রেফতারদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় ভাটারা থানার জোয়ারসাহারার খা পাড়ায় অভিযান চালিয়ে রাজুর পারিবারিক কবরস্থানের পাশের বাথরুম থেকে অস্ত্রগুলো উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ভাটারা থানায় অস্ত্র আইনে আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়ে।

গোয়েন্দা প্রধান বলেন, আসামিরা এসব অস্ত্র ব্যবহার করে ভারাটাসহ আশপাশের এলাকায় চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণসহ আধিপত্য বিস্তারের পরিকল্পনা করেছিল। ফলে রিকশার নম্বর প্লেটের সূত্র ধরে এলাকায় মহড়া চালায়। গ্রেফতাররা ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করেছে। তাদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, ভাটারার জোয়ারসাহারা এলাকায় জমি কেনাবেচা, ভবন নির্মাণ, টেন্ডারবাজি, আধিপত্য বিস্তারসহ প্রায় সময়েই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। রুবেলের ঘটনার মধ্য দিয়ে তারা নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার চেষ্টা করেছে। সবুজবাগ থানা এলাকায়ও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। সেটাতেও আমার ছয় জনকে গ্রেফতার করেছি। পাঁচটি অস্ত্র ও ৫০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।