আসন্ন ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে রাজধানী থেকে প্রায় দুই হাজার ভিক্ষুককে আটক করে সমাজসেবা অধিদফতরের পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠিয়েছে পুলিশ। ফলে অধিকাংশ ভিক্ষুককে পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলোয় ঈদ উদযাপন করতে হবে এবার।
পুলিশ ও সমাজসেবা অধিদফতর সূত্র বলছে, ঈদকে কেন্দ্র করে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ও স্থানগুলোয় ভিক্ষুকের উপদ্রব বেড়ে যায়। এ জন্য ভবঘুরে আইনের মাধ্যমে তাদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে কিছু ভিক্ষুক ঈদের আগে ছাড়া পেলেও সিংহভাগকে ছাড়া হবে ঈদের পর। সমাজসেবা অধিদফতর জানায়, ভবঘুরে ও ভিক্ষুক পুনর্বাসন কেন্দ্রে তাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তাদের কারিগরি দক্ষতা বাড়ানো হবে এখানে, যাতে তাদের আর ভিক্ষা করে জীবিকা চালাতে না হয়। এটা অধিদফতরের একটি চলমান প্রক্রিয়া। তবে ঈদ ঘিরে এর কার্যক্রম আরও বাড়ানো হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে গত ১ এপ্রিল থেকে ভিক্ষুক উপদ্রব কমাতে ডিএমপির প্রতিটি থানায় নির্দেশ দেওয়া হয়।
কয়েকটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (ওসি) জানান, রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও স্থান থেকে ভিক্ষুকদের আটক করে সমাজসেবা অধিদফতরে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ডিএমপির আইন অনুযায়ী কয়েকজনকে আদালতে পাঠানো হয়।
জানা যায়, গত ১ এপ্রিল থেকে অন্তত দুই হাজারের বেশি ভিক্ষুককে আটক করেছে পুলিশ, সিটি করপোরেশন ও সমাজসেবা অধিদফতর। তাদের মধ্যে রয়েছেন শারীরিক প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধ ও নারী। কয়েকজন ভিক্ষুককে ছেড়ে দেওয়া হলেও, অধিকাংশ ভিক্ষুককে ঈদ পর ছাড়া হবে বলে জানা যায়।
সমাজসেবা অধিদফতরের উপপরিচালক (ভিক্ষুক, চা-শ্রমিক ও হিজড়া) মো. শাহজাহান বলেন, ভিক্ষুকমুক্ত সমাজ, উপদ্রব সৃষ্টি প্রতিরোধ এবং তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমাদের একটি প্রকল্প আছে। ২০১৩ সালে ভবঘুরে আইন পাস করা হয়েছে। এই আইনে ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা আমাদের চলমান প্রক্রিয়া। তবে ঈদকে কেন্দ্র করে ভিক্ষুকদের উপদ্রব বেড়ে যায়। যে কারণে অভিযানের পরিমাণও বাড়াতে হয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) কে এন রায় নিয়তি বলেন, ভিক্ষুক উপদ্রব প্রতিরোধ করা পুলিশের একটি নিয়মিত কার্যক্রম। তবে ঈদকে ঘিরে আলাদা কোনও নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।