প্রতিবন্ধী শিল্পীদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটক

আশির দশকের মধ্যভাগে। ‘সোনার বাংলা সার্কাস’ নামে এক দল সার্কাসপার্টি যায় কক্সবাজারে। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে প্রদর্শনী করবে বলে তারা প্র্যাকটিস শুরু করে। কিন্তু শুরুতেই ‘অসামাজিক কার্যকলাপের’ অভিযোগ তুলে বাধ সাধে কিছু মৌলবাদী সংগঠন। চাঁদা দেওয়ার শর্তে সুরাহার প্রস্তাব আসে। কিন্তু সার্কাস দলটির কাছে টাকা ছিল না। এই অবস্থায় একদিন গভীর রাতে অতর্কিতে হামলা চালানো হয় সার্কাস দলের ওপর। একদল মানুষ সার্কাস দলের ঘুমন্ত সদস্যদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। চারদিকে দাউ দাউ আগুনে জ্বলে যায় খাঁচায় বন্দি জীব-জানোয়ার, খেলোয়াড়, ক্লাউন। রাতভর লাঞ্ছিত হয় সার্কাসের মেয়েরা। ভোরে দেখা যায় বিক্ষিপ্ত পড়ে থাকে হতাহত জন্তু আর মানুষ, ধোঁয়ার কুণ্ডলী, আহাজারি।

এর গল্প নিয়ে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী  শিল্পোৎসবে ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটকটি মঞ্চস্থ করেন প্রতিবন্ধী শিল্পীরা। দুই দিনব্যাপী প্রথম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী শিল্পোৎসব, ঢাকা' ২৪ শুরু হয়েছে শুক্রবার। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে শনিবারও চলবে এই উৎসব।  

‘সার্কাস সার্কাস’ নাটকে প্রতিটি চরিত্র সুনিপুণভাবে ফুটিয়ে তোলেন প্রতিবন্ধী শিল্পীরা

শুক্রবারি বিকাল ৩টায় এই উৎসবের উদ্বোধন করেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এসময় মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে ‘নৈঃশব্দ্যে ৭১’ নামের প্রথম নাটক মঞ্চায়িত হয়। সন্ধ্যায় দ্বিতীয় নাটক হিসেবে শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালায় প্রতিবন্ধী শিল্পীদের দ্বারা মঞ্চস্থ করা হয় আজাদ আবুল কালাম রচিত ও মোস্তাফিজ শাহীন নির্দেশিত ‘সার্কাস সার্কাস' নাটকটি। সুনিপুন অভিনয়ের মাধ্যমে প্রতিটি চরিত্র ফুটিয়ে তোলেন প্রতিবন্ধী শিল্পীরা। অভিনয়ের পাশাপাশি আবহ সংগীতের কাজও করেন তারা। পুরো নাটকটি শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের জন্য ইশারা ভাষায়ও দেখানো হয়।

নাটকটি ইশারা ভাষায়ও দেখানো হয়

সাধারণ দর্শকরাও নাটকটি বেশ উপভোগ করেন। নাটক শেষে দর্শকরা প্রতিক্রিয়া জানান, একটু সুযোগ সুবিধা পেলে এই প্রতিবন্ধী শিল্পীরাও যে অনেক ভালো কিছু করতে পারেন, এই নাটকের মধ্যে দিয়ে তারা তারই প্রমাণ রেখে গেলেন।