আমার কাছে ৪৫টি বাচ্চা আছে, ডিবিকে বলেন নিয়ে যেতে: আদালতে মিল্টন সমাদ্দার

চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার আশ্রমে আরও ৪৫টি বাচ্চা আছে। সেই বাচ্চাগুলো ডিবিকে নিয়ে যেতে বলেছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার।

রবিবার (৫ মে) বিকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শান্তা আক্তারের আদালতে মিরপুর মডেল থানায় করা মানবপাচার আইনের মামলায় রিমান্ড শুনানিতে এ কথা বলেন তিনি।

এদিন জাল মৃত্যুসনদ জালিয়াতির অভিযোগে মিরপুর মডেল থানার মামলায় তিন দিনের রিমান্ড শেষে মিল্টন সমাদ্দারকে আদালতে হাজির করেন তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর জোনাল টিমের সাব-ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ কামাল হোসেন। এরপর তাকে মানবপাচার আইনের মামলায় গ্রেফতার দেখানোসহ সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক শিকদার মাইতুল আলম।

মিল্টন সমাদ্দারের পক্ষে আব্দুস সালাম শিকদার রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, যার কেউ নাই, অনাথ, অর্ধাঙ্গ, ক্ষুধার্ত মানবতার ফেরিওয়ালা সেজে তাকে আশ্রয় দেন মিল্টন সমাদ্দার। ২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাকিব নামে এক ব্যক্তি একটি শিশুকে নিয়ে আসেন। পরে মিল্টন তাকে রিসিভ করেন। ২০২০, ২১, ২২, ২৩-এও ডিবি ছিল। বরিশালের ভাষায় একটা কথা আছে, শাপে কামড় দিলে, পিঁপড়া-উল্লার বিষও জমা হয়। তিনি অভিযোগ করেন, রাকিবকে ডিবির প্রভাব খাটিয়ে মামলা করা হয়েছে।

আব্দুস সালাম শিকদার আরও বলেন, তিনি (মিল্টন সমাদ্দার) কিন্তু রাকিবের কাছে বাচ্চাকে আনতে যাননি। বরং রাকিবই তার কাছে বাচ্চাটাকে নিয়ে আসে। খাওয়া, পড়া, চিকিৎসা, মানবিক সাহায্য যা করার তিনি করেছেন। বাংলাদেশে আরেকজন মাদার তেরেসা হলে তিনি হতেন মিল্টন সমাদ্দার।

যে বাচ্চাকে নিয়ে মামলা হয়েছে সেই বাচ্চা আশ্রমের বাবুর্চির কাছে কাছে বড় হচ্ছে জানিয়ে এ আইনজীবী আরও বলেন, তিন বছর ৭ মাস পর মিডিয়ার ঝলকে মামলা। বউয়ের দোষ ধরা হলে পায়ে পায়ে ধরা যায়, মিল্টন এখন সেই পর্যায়ে গেছে।

এ সময় বিচারককে উদ্দেশ করে কাঠগড়ায় থাকা মিল্টন খন্দকার বলেন, ‘আরও ৪৫টা বাচ্চা আছে। ডিবিকে বলেন নিয়ে যেতে।’

গত ২ মে আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। তার আগে ১ মে রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এরপর তার বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

জানা যায়, গত ২৫ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে প্রতারণার নানা অভিযোগ উঠে আসে। এতে বলা হয়, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ১৬টির বেশি নম্বর এবং তিনটি ব্যাংক হিসাবে প্রতি মাসে প্রায় কোটি টাকা জমা হয়। এর বাইরে অনেকেই তার প্রতিষ্ঠানে সরাসরি অনুদান দিয়ে আসেন। এই অর্থের অপব্যবহার করেন তিনি। মানবিক কাজের জন্য এ পর্যন্ত তিনটি রাষ্ট্রীয় পুরস্কারও পেয়েছেন মিল্টন সমাদ্দার।

আরও পড়ুন- 

মিল্টন সমাদ্দার আটক

মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তদন্ত করবে ডিবি

মিল্টন সমাদ্দার ৩ দিনের রিমান্ডে

ভুয়া মৃত্যুসনদ নিজেই তৈরি করতো মিল্টন: হারুন অর রশীদ

মিল্টনের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিতদের এখন কী হবে

মিল্টন সমাদ্দারের স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছে ডিবি

মিল্টন সমাদ্দার প্রতিহিংসার শিকার: আইনজীবী

মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ