অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে সরকার দেশব্যাপী বড় অভিযান শুরু করেছে। ইতিমধ্যে ১ হাজারের বেশি মোবাইল ব্যাংকিং (এমএফএস) অ্যাকাউন্ট বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং ১ হাজার ১০০-এর বেশি এজেন্টকে শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নতুন সাইবার সুরক্ষা আইনে অনলাইন জুয়া সম্পূর্ণভাবে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
রবিবার (২৫ মে) রাতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি’ তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অনলাইন জুয়া খেলা, তা পরিচালনা, উৎসাহিত করা, অর্থ লেনদেন এবং এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন—সবকিছুই সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৪-এর ২০, ২১ ও ২২ ধারা অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ। ইতিমধ্যেই দেশে ১ হাজার ১০০ জনের বেশি জুয়া এজেন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া প্রায় ১ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যেগুলো জুয়া লেনদেনে ব্যবহৃত হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
আইন অনুযায়ী, কোনও অ্যাপ, ওয়েবসাইট বা অনলাইন পোর্টাল তৈরি, পরিচালনা, প্রচার বা সহযোগিতা করা এবং জুয়া সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন দেওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এইসব কর্মকাণ্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা এবং কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
সরকার সাধারণ মানুষকে অনলাইন জুয়া এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত সবকিছু থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে। যদি কেউ কোনও জুয়া অ্যাকাউন্ট, মোবাইল ব্যাংকিং সেবা, ব্যাংক, ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ বা হুন্ডির লেনদেনের তথ্য জানেন, তাহলে ই-মেইলের ([email protected]) মাধ্যমে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। এছাড়া, যারা আগে জুয়ার বিজ্ঞাপন বা প্রচারে যুক্ত ছিলেন, তাদের অবিলম্বে এসব কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসতে বলা হয়েছে। কেউ যদি অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে প্রতারিত বা ক্ষতিগ্রস্ত হন, তারা সাইবার সুরক্ষা আইনের ৩০ ধারা অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা করতে পারবেন।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অনলাইন জুয়া এখন শুধু অপরাধ নয়, এটি একটি গুরুতর সামাজিক ব্যাধি। অনেকেই এ জুয়ার ফাঁদে পড়ে সবকিছু হারিয়েছেন, এমনকি কেউ কেউ আত্মহত্যাও করেছেন। তাই দেশের স্বার্থে এবং মানুষের সুরক্ষায় এ অভিযান আরও জোরদার করা হবে।