আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ বাতিল ও চাকরি জাতীয়করণের দাবি

সরকারি সব দফতর-অধিদফতরে নিয়োজিত আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবাগ্রহণ নীতিমালা (ঠিকাদারের মাধ্যমে নিয়োগ প্রথা) ২০১৮ বাতিল করে কর্মরত আউটসোর্সিং কর্মচারীদের বহাল রাখা, বয়স শিথিল করে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে চাকরী জাতীয়করণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ আউটসোর্সিং কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি।

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ই দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আউটসোর্সিং কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাহবুবুর রহমান আনিস। তিনি অভিযোগ করে বলেন, টেন্ডার জটিলতায় কর্মরত অনেকের চাকরি চলে যায়, বছর শেষে জুন মাসে রিনিউ করার নামে বিপুল অঙ্কের ঘুষ দাবি করেন, না দিলে চাকরি চলে যায়।

মাহবুবুর রহমান আনিস বলেন, ঠিকাদারকে ঘুষ না দিতে পারায় যাদেরকে চাকরি চ্যত করা হয়েছে, তাদেরকে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে।

করোনার সময় থেকে সারে তিন বছর মুগদা মেডিক্যালে আউটসোর্সিংয়ের কাজ করেছেন আদিয়া আলম। ১৪ মাসের বেতন বকেয়া থাকার পরও আগামী মাস থেকে চুক্তির মেয়াদ আর না বাড়িয়ে শেষ হওয়ার হতাশায় ভুগছেন এই নারী। সংবাদ সম্মেলনে আসা এই ভুক্তভোগী নারী বলেন, চলতি মাসে মুগদা মেডিক্যালে নতুন করে টেন্ডার দেওয়া হবে। আমাদের বলা হয়েছে, আমরা যে ২৮৬ জন আউটসোর্সিংয়ে কাজ করি, আমাদের মেয়াদ আর না বড়িয়ে নতুন লোক নিয়োগ দেওয়া হবে। মুগদা মেডিক্যালের পরিচালকের কাছে যখন গিয়েছি, তিনি আমাদের চেনেন না বলে জানান। আমরা যারা এত বছর যাবত কাজ করেছি, তাদের ভবিষ্যৎ কী হবে। এত মাসের বেতন না পেয়ে আমরা মানবেতর জীবন যাপন করছি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের মূল দাবি চাকরি জাতীয়করণ করা। তবে আউটসোর্সিং নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত যেহেতু এখন হয়নি, পাশাপাশি এত আউটসোর্সিংয়ের  লোকদের যদি জাতীয়করণ করা সম্ভব না হয়, তাহলে অন্তত যেন মাস্টার রুল হিসেবে করা হয়। আমরা কোনও কোম্পানির (ঠিকাদার) অধীনে থাকতে চাই না।

আরেক ভুক্তভোগী নারায়ণগঞ্জের স্বাস্থ্য অধিদঢতরে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া অফিস সহকারী মুকুল চন্দ্র দেবনাথ। তিনি প্রায় দেড় বছর বিনা বেতনে কাজ করেন। তিনি বলেন, যখন করোনার সময় আমাদের নিয়োগ দেওয়া হয় আউটসোর্সিং হিসেবে। এরপর বিনা বেতনে এক বছর চার মাস কাজ করানো হয়। বেতন চাইলে বলে আগামী মাসে আসবে। এত দিন কাজ করার পর জানতে পারি—  প্রজ্ঞাপন করে আমাদের এ নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। এই পোস্ট স্বাস্থ্য অদিদফতরের প্রয়োজন নেই। বাতিল করলেঅ, কিন্তু আমরা যে প্রায় দেড় বছর করোনার মধ্যে কাজ করেছি, সেই ন্যায্য পাওনাটা পর্যন্ত পাইনি।

সাংগঠনিক সম্পাদক মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনেরর সহ-সভাপতি মোবেলাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।