সহকারী অধ্যাপক পদে সুপারনিউমারারি পদোন্নতির হালনাগাদ তালিকায় অন্তর্ভুক্তের পরও ৩৩ বিসিএসের স্বাস্থ্য ক্যাডারের প্রায় ৫০০ চিকিৎসককে বাদ দেওয়ার অভিযোগ করেছেন বিসিএসের স্বাস্থ্য ক্যাডার একাংশের চিকিৎসকরা। এসময় তারা ঘোষিত সুপারনিউমারারি পদোন্নতিতে তাদের অন্তর্ভুক্তের দাবি জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৩ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে পদোন্নতির ফিটলিস্টে থাকা ৩৩ বিসিএসের স্বাস্থ্য ক্যাডারের একাংশ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তানজিন হুদা বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী গত বছর ২৭ অক্টোবরের মধ্যে পদোন্নতি যোগ্য চিকিৎসকদের অনলাইনে হিউম্যান রিসোর্স ইনফরমেশন সিস্টেমে (এইচআরআইএস) তথ্য হালনাগাদ করতে বলা হয়। পরবর্তী সময়ে এইচআরআইএসের প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ডিসেম্বরে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি যোগ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ফিটলিস্ট প্রকাশ করা হয়। যোগ্য চিকিৎসকদের মোট সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে সাড়ে ৭ হাজার সুপারনিউমারারি পদ সৃজনের মাধ্যমে পদোন্নতির আশ্বাস দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, তিনটি ধাপে ফিটলিস্টে অন্তর্ভুক্ত ৩৩ বিসিএস পর্যন্ত পদোন্নতি যোগ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নাম সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানোও হয়। কিন্তু ফিটলিস্ট থেকে ৩৩ বিসিএসের পদোন্নতি যোগ্য প্রায় ৫০০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে অন্যায়ভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে। অথচ যোগ্যদের সংখ্যা বিবেচনা করেই সুপারনিউমারারির সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু এখন বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন ৩৩ বিসিএসের কিছু চিকিৎসক। অন্যান্য ক্যাডারে সুপারনিউমারারি পদোন্নতি হয়ে থাকে ব্যাচ ভিত্তিক। চাকরির ১১ বছর প্রান্তিক পর্যায়ে সেবা দেওয়ার পরও ৩৩তম বিসিএসের একাংশ পদোন্নতি না পাওয়ায় হতাশ ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, একদিকে যেমন আমাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে অন্যদিকে তথ্য হালনাগাদের আবেদনের সবশেষ সময় গত ২৭ অক্টোবর শেষ হলেও অনেকে অনিয়ম করে চলতি বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি এমনকি মার্চ মাসেও তথ্য হালনাগাদ করে পদোন্নতির জন্য সুপারিশকৃত হয়েছে। অথচ আবেদনের সময়ে তারা যোগ্য ছিলেন না। এছাড়া ২ ধাপে সহযোগী অধ্যাপক পদে এক হাজার ৩৯৮ জনকে সুপার নিউমারারি পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়েছে। ফলে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে ৩৩ বিসিএসের মাত্র ৫০০ জনকে পদোন্নতি দিলে শূন্যপদে পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি হয়।
ডা. তানজিন হুদা বলেন, দেশের ২৬টি বিসিএস ক্যাডারে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তাদের কাজের দক্ষতা ও চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধির সঙ্গে পদোন্নতি প্রদান করা হয়। তবে পদোন্নতি যোগ্য কর্মকর্তার তুলনায় যদি শূন্যপদ কম থাকে তবে বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারনিউমারারি পদ সৃজন করা হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য ক্যাডারে পদোন্নতির সব যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অনেকেরই মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে কেটে যায় চাকরি জীবন। দীর্ঘদিন পদোন্নতিবঞ্চিত ও সহকারী অধ্যাপকের ফিটলিস্টে যোগ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে প্রথমবারের মতো হতে যাওয়া সুপারনিউমারারি পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করে বৈষম্যের শিকার না করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ৩৩ বিসিএসে পদোন্নতিবঞ্চিত ডা. আহমেদ হোসাইন সিদ্দিকী, ডা. আল মামুন, ডা. মশিউর রহমান ও প্রান্তিক পর্যায় থেকে আসা ৩৩তম বিসিএসের সহকারী অধ্যাপক পদোন্নতিতে বৈষম্যের শিকার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।