জুলাই অভ্যুত্থানের পর রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। কর্মীদের নিরলস প্রচেষ্টা, আন্তরিক সেবা ও সমন্বয়ে অনেকটা বদলে গেছে বিমানবন্দরের সার্বিক চিত্র। বিদায়ী বছরে ১ কোটি ২৪ লাখ ৮৭ হাজার যাত্রীকে সেবা দিয়ে অনন্য রেকর্ড গড়েছে শাহজালাল। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ বিমানবন্দর দিয়ে এত বিপুল সংখ্যক যাত্রীর চাপ সামলানো চ্যালেঞ্জিং ছিল। তারপরও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রচেষ্টায় এটা সম্ভব হয়েছে।
এক বছরে ১ কোটি ২৪ লাখ ৮৭ হাজার যাত্রীকে সেবা দেওয়ার বিষয়ে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, ‘এটি একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ। চ্যালেঞ্জ নিয়েই কর্তৃপক্ষ সেবা দিয়ে যাচ্ছে। থার্ড টার্মিনালের পুরোপুরি অপারেশন শুরু হলে যাত্রী আরও বাড়বে।’
তিনি জানান, চোখে পড়ার মতো বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জরুরি ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে। যেমন- প্রবাসী লাউঞ্জ, ওয়েটিং লাউঞ্জ, হেল্প ডেস্ক, হজ ইউনিট, দ্রুত লাগেজ ডেলিভারি, ওয়েব পোর্টাল চালু, প্রশিক্ষণ দেওয়া, পরিষ্কার ও বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করা, বিএমইটিতে প্রবাসীদের অবদানের স্বীকৃতি সংক্রান্ত মডিউল চালু, গ্রিন চ্যানেল চালু, নতুন টেলিফোন, ইন্টারনেট, নতুন ট্রলি সংযোজন, হটলাইন চালু, ডমেস্টিকে যাত্রীদের আসন সংযোজন, নির্দেশিকা প্রতিক, মশক নিধন পদ্ধতি, আংশিক ই-গেট চালু, পাখি হঠানোর জরিপ, শাটল বাস চালুর মতো যুগোপযোগী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
আমির হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, ‘সত্যিই ভালো একটা কাজ। আগে যেখানে লাগেজ পেতাম দুই ঘণ্টায়, এখন সেটা পেয়েছি এক ঘণ্টায়। আগে যেখানে ট্রলি পাওয়া যেতো না, এখন দেখা গেছে ট্রলিম্যান দাঁড়িয়ে ডাকছেন, কিছু লাগবে বলে সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন। আগে যেখানে মাথায় লাগেজ নিয়ে ক্যানপি থেকে গোলচত্বর যেতাম, এখন সেখানে পেয়েছি শাটল বাস। আরও পাচ্ছি ফ্রি টেলিফোন সুবিধা ও ইন্টারনেট কানেকশন। এখনকার সেবা নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট।’
তিনি বলেন, ‘এই বিমানবন্দর দিয়ে গত বছর বার মিলিয়নেরও বেশি যাত্রীকে সেবা দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের শেষে যাত্রীর সংখ্যা আরও বাড়বে। এখানে দৈনিক কমপক্ষে দেড়শ’ ফ্লাইট ও ১৩০টির মতো ডমেস্টিক ফ্লাইট পরিচালিত হয়। এখন পর্যন্ত ৮৮ শতাংশ যাত্রীর কাছে ১৫ মিনিট থেকে ৬০ মিনিটের মধ্যে লাগেজ ডেলিভারি নিশ্চিত হয়েছে। লাগেজ বহনের সুবিধার্থে বিমানবন্দরে নতুন সংযোজনের পর ট্রলির সংখ্যা বেড়ে ৩ হাজার ৬০০টিতে দাঁড়িয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এটা সত্যিই কঠিন কাজ। ৮০ লাখের ধারনক্ষমতার এই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ যাত্রী যাতায়াত করেছে। এটা যেমন চ্যালেঞ্জের তেমনই আনন্দের। কারণ আমরা সব যাত্রীকে সর্বাত্মকভাবে সেবা দিতে পেরে আনন্দিত।’