বিয়ের প্রলোভনে যৌনসম্পর্ক শাস্তিযোগ্য অপরাধ: অধ্যাদেশের বৈধতা প্রশ্নে রুল

বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক সংক্রান্ত বিষয়ে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর বৈধতা প্রশ্নে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রুলে বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করার বিধান কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত, অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করে বাতিল করা হবে না— তা জানতে চাওয়া হয়েছে। মামলার বিবাদীদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রবিবার (৪ মে) বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তাজরুল হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত হাসান। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট তানজিলা রহমান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন খান জিয়াউর রহমান।

এর আগে গত ৭ এপ্রিল বিয়ের প্রলোভনে যৌনসম্পর্ক স্থাপনকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করার প্রচলিত আইনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. রাশিদুল হাসান এবং মানবাধিকার সংগঠন ‘এইড ফর ম্যান ফাউন্ডেশনে’র পক্ষে আইনজীবী ইশরাত হাসান এ রিট দায়ের করেন।

রিটে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব এবং নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ের সচিবকে মন্ত্রণালয়ের বিবাদী করা হয়।

রিটে বিয়ের প্রলোভনে যৌনসম্পর্ক স্থাপনকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করার বিধান কেন অবৈধ, বেআইনি ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না— তা জানতে চেয়ে রুল জারির নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল।

রিট আবেদনে বলা হয়েছে, দুজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও পুরুষের সম্মতিতে সংঘটিত যৌনসম্পর্ক যদি শুধুমাত্র ‘বিয়ের প্রতিশ্রুতি’ না রাখার কারণে অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়, তবে তা ব্যক্তি স্বাধীনতা ও নারীর সম্মতির অধিকার লঙ্ঘন করে।

রিটকারীর পক্ষে বলা হয়, এই ধরনের অভিযোগে নারীকে ‘নির্বোধ’ বা ‘লোভী’ হিসেবে চিত্রায়ণ করা হয়, যা নারীর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা ও সম্মানের পরিপন্থি।

রিট দায়েরের পর আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেছিলেন, প্রতিশ্রুতি না রাখার কারণে শুধু পুরুষের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দেওয়া একটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটি একটি নাগরিক অধিকার পরিপন্থি এবং ন্যায়বিচার পরিপন্থি আইন। তাই এই আইনকে বাতিল করার জন্য রিটটি দায়ের করা হয়েছে।