সরকার বিদ্যুতের অবকাঠামো ও সংযোগে অগ্রগতি অর্জন করলেও, গঠনগত সমস্যাগুলো এখনও রয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা ও ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের ডিন এম শামসুল আলম।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) প্রস্তাবিত জ্বালানি সুবিচারে ‘বাংলাদেশ জ্বালানি রূপান্তর নীতি ২০২৪’ নিয়ে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শামসুল আলম বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ৯৮ শতাংশ পরিবারেই বিদ্যুৎ রয়েছে। তবে বিদ্যুৎ পাওয়া মানেই জ্বালানি সুবিচার নয়। অনেক গ্রামীণ ও নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী এখনও ঘন ঘন লোডশেডিং ও ভোল্টেজ সমস্যায় ভোগেন ও বেশি দামে বিদ্যুৎ কেনেন। বাংলাদেশে জ্বালানি সুবিচার সংকট কেবল একটি কারিগরি সমস্যা নয়— এটি অধিকার, সাম্য ও সুশাসন ব্যবস্থার প্রশ্ন। এটি আমাদের বাধ্য করে ভাবতে যে, কীভাবে জ্বালানি উৎপাদন, আমদানি, বণ্টন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে এমন একটি ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়।
তিনি বলেন, সরকার অবকাঠামো ও সংযোগে অগ্রগতি অর্জন করলেও, গঠনগত সমস্যাগুলো এখনও রয়ে গেছ। দুর্নীতি, ব্যয়বহুল সেবা, পরিবেশ ধ্বংস ও বর্জনমূলক নীতি সেসব মানুষকে প্রান্তিক করে দিচ্ছে, যাদের জন্য জ্বালানি উন্নয়ন বা রূপান্তর হওয়া উচিত। নইলে সে রূপান্তর ন্যায্য হয় না, জ্বালানি সুবিচার ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়।
এম শামসুল আলম বলেন, বাংলাদেশকে এখন একটি সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে হবে— কেন্দ্রীয়, জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভর, প্রভাবশালী গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থায় এগিয়ে যাবে— নাকি একটি ন্যায্য, গণতান্ত্রিক ও টেকসই জ্বালানি রূপান্তরের পথে হাঁটবে, যেখানে জনগণ ও প্রকৃতি অগ্রাধিকার পাবে। এখনই সময় একটি কর্মপন্থা গ্রহণের, যা ন্যায্যতা, স্বচ্ছতা, অংশগ্রহণ ও দীর্ঘমেয়াদি সহনশীলতার নীতিতে পরিচালিত হবে। কেবল তখনই বাংলাদেশে সত্যিকারের সুবিচারের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। ক্যাব প্রস্তাবিত ‘বাংলাদেশ জ্বালানি রূপান্তর নীতি ২০২ সেই নির্দেশনা দেয়।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা ও ক্যাবের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মিজানুর রহমান রাজু।