রাজধানীর দক্ষিণখান থানার ট্রান্সমিটার মোড়ের বাসিন্দা প্রতিবন্ধী নাহিদ ইসলামের পাথর সরবরাহের ব্যবসা দখলে নিয়েছেন ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক আল আমিন সরকার ও সাবেক ছাত্রদল নেতা মঈন সরকার। এর প্রতিবাদে রবিবার (১১ মে) ট্রান্সমিটার মোড়ে ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড সাধারণ জনগণের ব্যানারে মানববন্ধন করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শারীরিক প্রতিবন্ধী নাহিদ ইসলাম ২০১৬ সালে ট্রেন দুর্ঘটনায় ডান পা হারান। পরে সংসার চালাতে ব্যাংক ও সমিতি থেকে এক লাখ ৮০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে দক্ষিণ খানের একটি ভবনের কনস্ট্রাকশনে পাথর সরবরাহের কাজ নেন। এ কাজ করে নাহিদ তার পরিবার এবং মৃত বড় ভাইয়ের পরিবারের ভরণপোষণ চালিয়ে আসছিলেন। গত ৩০ এপ্রিল বিএনপির ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের আহ্বায়ক আল আমিন তার লোকজন নিয়ে এসে পাথর সরবরাহের কাজ বন্ধ করে দেন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন।
মানববন্ধনে জানানো হয়, ৫ আগস্টের পর এলাকায় চাঁদাবাজিতে নেমেছেন আল আমিন ও তার সহযোগীরা। মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকের নাম ব্যবহার করে এলাকায় ময়লা ফেলার কাজ, টেম্পুস্ট্যান্ড, ঝুট ব্যবসা দখলে নিয়েছেন আল আমিন ও মঈন সরকার। আল আমিনের বিরুদ্ধে এলাকায় মাদকের ব্যবসা করার অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলাও আছে। এর ধারাবাহিকতায় প্রতিবন্ধী নাহিদ ইসলামের ব্যবসা দখলে নিয়েছেন আল আমিন ও মঈন সরকার।
এ বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমি পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। কোনোমতে ধারদেনা করে ব্যবসা চালাচ্ছি। এর মধ্যে ব্যবসা দখলে নিয়েছেন আল আমিন ও মঈন সরকার। এখন কীভাবে সংসার চালাবো তার কোনও পথ খুঁজে পাচ্ছি না। বিএনপি নেতাদের অনেক অনুরোধ করেছি। কোনও কাজ হয়নি।’
দক্ষিণ খান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হেলাল উদ্দিন তালুকদারকে বিষয়টি জানিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে নাহিদ বলেন, ‘আমি তার কাছে যাইনি। কারণ তাদের সম্মতিতে আমার ব্যবসা দখল হয়েছে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আল আমিন সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘২৬ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতি করছি। কখনও কেউ আমার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করেনি। এখন আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে। প্রতিবন্ধী নাহিদ ইসলামের ব্যবসা দখলের সঙ্গে আমি জড়িত নই।’