আন্দোলনের সময় নুসরাত ফারিয়া দেশে ছিলেন না: আইনজীবী

জুলাই আন্দোলন কেন্দ্রিক ভাটারা থানাধীন ছাত্রদল নেতা এনামুল হক হত্যাচেষ্টা মামলায় আদালতকে শুনানির সময় চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়ার আইনজীবী ফারহান মোহাম্মদ আয়াজ বলেন, জুলাই আন্দোলনের সময় আমার মক্কেল দেশে ছিলেন না। আন্দোলনের পরও তিনি সিনেমা ও শুটিংয়ের কাজে ৩ বার দেশ থেকে বিদেশে গিয়েছেন। তার পালিয়ে যাওয়ার কোনও ইচ্ছে ছিল না। 

সোমবার (১৯ মে) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ্ ফারজানা হকের আদালতে তিনি এসব কথা বলেন। পরে বিচারক বলেন, আপনার মক্কেলের পক্ষে বিদেশে যাওয়ার যে সাবমিশন দাখিল করেছেন, সেটা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাচাই করে দেখবেন। আজ জামিন শুনানি হচ্ছে না। পরে বিচারক আগামী ২২ মে জামিন শুনানির দিন ধার্য করেন। 

এদিন সকাল সাড়ে ৮টায় তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। এরপর আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার উপ-পরিদর্শক মো. বিলাল ভূইয়া তাকে কারাগারে রাখার আবেদন করেন। আসামি পক্ষের কয়েকজন আইনজীবী তার জামিন আবেদন করেন। তাদের মধ্য ফারহান মোহাম্মদ আয়াজ কথা বলেন। তিনি বলেন, তিনি বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য নায়িকা। তার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক নেই। তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্যও না। জুলাই আন্দোলনের সময় আমার মক্কেল দেশে ছিলেন না। সেজন্য আমরা তার পাসপোর্ট আদালতে পেশ করেছি। আন্দোলনের পরও উনি সিনেমা ও শুটিংয়ের কাজে ৩ বার দেশ থেকে বিদেশে গিয়েছেন। তার পালিয়ে যাওয়ার কোন ইচ্ছে ছিল না। তিনি জানতেন, তিনি কোন অপরাধ করেননি। আন্দোলনের সময় ছাত্রদের পক্ষেও স্ট্যাটাস দিয়েছেন। 

এরপর রাষ্ট্র পক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করে শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, এই সেই স্বনামধন্য নায়িকা। যার মতো অনেকেই ফ্যাসিস্টের দোসর ছিলেন। তার মতো ফেরদৌসকেও আমরা খুঁজছি। ফ্যাসিস্টরা এসব নায়ক-নায়িকার নাম বিক্রি করে ক্ষমতাশালী হয়। সে জুনাইদ আহমেদ পলকের হাত ধরে উপরে উঠে নায়িকা হয়। বায়োপিকে সে হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করে। অভিনয় করা দোষের নয়, কিন্তু সে যে বক্তব্য দিয়েছে সেটা দোষের। সে বলেছে, প্রতিটি ঘরে ঘরে হাসিনা আছে। আমাদের মা-বোনরা কী খুনি হাসিনা? 

ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, আমাদের ছাত্র ও যুব সমাজ অনলাইন জুয়ায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। সে অনলাইন জুয়ার অ্যাম্বাসেডর। তার একটা গান মারাত্মক-সবাই মিলে খেলবো। যুব সমাজকে নষ্ট করার জন্য সে কাজ করছে। আন্দোলনের সময় এই অভিনেত্রীরা ফ্যাসিজমকে রক্ষার জন্য গান, নাটকের মাধ্যমে সহযোগিতা করেছে। আমরা ফ্যাসিস্টের সহযোগীদের দেখেছি, আমার বোনেরা শাহবাগে যখন দাঁড়িয়েছিল, তখন তারা আমার বোনেদের ওপর গরম পানি ফেলার কথা বলেছে। দেশে বিদেশে থেকে প্ররোচনা চালিয়ে,  ফ্যাসিস্টের সহযোগী, ফলোয়ার্স যারা আছে, যারা আর্থিক, টেলিফোনে সহযোগিতা করেছে তাদের একজন নুসরাত ফারিয়া। হত্যাচেষ্টার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকায় তাকে আমরা খুঁজছিলাম। তাকে পেয়েছি। বর্তমানে ফ্যাসিস্টকে সহযোগিতা করার জন্য অনেকে বিভিন্ন জায়গায় গুপ্ত হামলা চালাচ্ছে,মিছিল করছে।  সে যদি জামিন পায় তাহলে ফ্যাসিস্টকে পুনরুদ্ধারে কাজ করবে। 

পরে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একইসঙ্গে জামিন শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।