আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতরে বর্তমানে কর্মরত ৪৪ জন আমলা ও ৯৫ জন ম্যাজিস্ট্রেটের তালিকা প্রকাশ করেছে ‘জুলাই ঐক্য’। এ সময় ৮০টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত এই প্ল্যাটফর্মটি এসব আমলা ও ম্যাজিস্ট্রেটদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোসহ ৭ দফা দাবিও জানিয়েছে। আগামী ৩১ মে’র মধ্যে এসব দাবি আদায় না হলে ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি ঘোষণারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (২০ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই হুঁশিয়ারি দেন জুলাই ঐক্যের সংগঠক এবি জোবায়ের।
তিনি বলেন, আমাদের দাবি আদায়ে আমরা সরকারকে ৩১ মে পর্যন্ত সময় দিচ্ছি। এই সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে আমরা ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবো। প্রয়োজনে দাবি আদায়ে আরও কঠোর কর্মসূচি দেবো।
এর আগে লিখিত বক্তব্যে ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন জুলাই ঐক্যের সংগঠক মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ।
দাবিগুলো হলো-
আগামী ৩১ মে’র মধ্যে তালিকায় উল্লিখিত সন্ত্রাসী দল আওয়ামী লীগের সব দোসরদের বাধ্যতামূলক অবসর দিতে হবে; তিন সরকারি কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করে দৃশ্যমান কাজের অগ্রগতি দেশের জনগণকে দেখাতে হবে; দেশের তথ্য পাচারকারী ছাত্রজনতার বুকে গুলি চালানো, নির্দেশকারী এবং সহযোগিতাকারী সব আমলা ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পরিবারসহ সবার ব্যাংক হিসাব ও অবৈধ সম্পদ জব্দ করতে হবে; স্বৈরাচারের দোসর আমলা ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
এছাড়া, আগামী ৩৬ শে জুলাইয়ের (৫ আগস্ট) মধ্যে এখন পর্যন্ত চিহ্নিত সব স্বৈরাচারের দোসরদের শ্বেতপত্র সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে; আইনের ১৩২ ধারার কারণে থানায় খুনি পুলিশদের নামে মামলা নেওয়া হয় না। আগামী ৩১ মে’র মধ্যে এই ধারা বাতিল অথবা সংশোধন করতে হবে; এবং আগামী ৩১ মে’র মধ্যে সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। তারা এখন কোথায় আছে এবং কত জন কার সহযোগিতায় দেশ ছেড়েছে তাদের তালিকাও প্রকাশ করতে হবে।
এর আগে পতিত সরকারের দোসর আখ্যা দিয়ে বর্তমানে প্রশাসনে কর্মরত ৪৪ জন আমলার নাম পড়ে শোনান জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শহীদ সৈয়দ মুনতাসুর রহমানের বাবা সৈয়দ গাজিউর রহমান। পাশাপাশি আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানোর নির্দেশদাতা ৯৫ জন ম্যাজিস্ট্রেটের নাম পড়ে শোনান জুলাই ঐক্যের জুলাই ঐক্যের সংগঠক ও আপ বাংলাদেশের সদস্য আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ। তবে দুটি তালিকাই অসম্পূর্ণ বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
এছাড়া পরবর্তীতে কালচারাল ফ্যাসিস্ট, শিক্ষাঙ্গণ, চিকিৎসাঙ্গন, আইনাঙ্গন এবং গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সেক্টরে থাকা স্বৈরাচারের দোসরদের তালিকাও প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়।