মেট্রোরেল পিলারের পাশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর রক্তাক্ত মরদেহ, বাবা বলছেন ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’

রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়িতে মেট্রোরেলের একটি পিলারের পাশে মাহমুদুল হাসান (২৪) নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ৫৩তম ব্যাচের (দ্বিতীয় শিফট) শিক্ষার্থী ছিলেন।

সোমবার (১৯ মে) দিবাগত রাত ১২টার পর মাহমুদুলকে গুরুতর আহত অবস্থায় রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখে কয়েকজন পথচারী তাকে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মাহমুদুল হাসানের বাড়ি নওগাঁর সাপাহার উপজেলার আশড়ন্দ গ্রামে। তিনি আইহাই উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইদ্রিস মাস্টারের ছেলে। পরিবারের পক্ষ থেকে জানা গেছে, মাহমুদুল গত বৃহস্পতিবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন।

পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মেট্রোরেল লাইনের ১২৫ নম্বর পিলারের পাশেই মাহমুদুলের রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে পথচারীরা বিষয়টি নজরে এনে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান।

এ বিষয়ে পল্লবী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘আমরা কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে মরদেহ গ্রহণ করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করি এবং পরে মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করি। প্রাথমিকভাবে এটি একটি সড়ক দুর্ঘটনা বলে ধারণা করা হচ্ছে। সম্ভবত কোনো যানবাহনের ধাক্কায় তার মৃত্যু হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার আগ পর্যন্ত মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।’

তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা দায়ের হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও লিখিত অভিযোগ বা এজাহার দেওয়া হয়নি।

মাহমুদুল হাসানের বাবা ইদ্রিস মাস্টার বলেন, ‘আমার ছেলে স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করেছে। তার শরীরে বড় ধরনের কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না। তাই আমরা থানায় কোনও অভিযোগ করিনি।’ তিনি আরও জানান, মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে এসে মঙ্গলবার রাতেই জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

মাহমুদুলের সহপাঠী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি নুর ইসলাম বলেন, ‘মাহমুদুল ছিলেন অত্যন্ত সদালাপী, দায়িত্বশীল ও বন্ধুবৎসল একজন শিক্ষার্থী। তার মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার এক প্রতিশ্রুতিশীল তরুণকে হারিয়েছে, যা আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।’