ক্রুদের প্রতি কঠোর নির্দেশনা জারি বিমানের

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রুদের সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনায় বিশেষ নির্দেশনা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। গত ১৯ জুন বিমানের ফ্লাইট সার্ভিস বিভাগ এই নির্দেশনা জারি করা হয়।

ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বাধ্যতামূলক হোটেলে অবস্থান করতে হবে; সব কেবিন ক্রুকে কেবল কোম্পানি নির্ধারিত হোটেলে থাকতে হবে। আত্মীয়ের বাড়ি বা অন্য কোনও আবাসনে থাকা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। ছুটির সময় শহর ত্যাগ করার অনুমতি নেই। প্রয়োজনে ক্যাপ্টেনকে আগে থেকে অবহিত করতে হবে এবং ক্যাপ্টেনের কাছ থেকে স্পষ্ট অনুমতি নিতে হবে। সব ক্রু সদস্যকে রাত ১০টার মধ্যে তাদের নিজ নিজ হোটেল কক্ষে ফিরতে হবে। দিনের বেলায় কোনও পর্যটন আকর্ষণ বা ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন করতে চাইলে অবশ্যই ক্যাপ্টেনকে আগে অবহিত করে অনুমতি নিতে হবে। এসব নির্দেশনা মেনে চলতে ব্যর্থ হলে কোম্পানি আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে।

বিমানের জনসংযোগ কর্মকর্তা রওশন কবির বাংলা ট্রিবিউনকে এই নির্দেশনা জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কোনও কোনও পাইলট এবং কেবিন ক্রু বিদেশে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় নিয়ম ভঙ্গ করে ইচ্ছামতো চলাফেরা করছেন। কেউ আবার বিনা নোটিশে বিদেশে থেকে যাচ্ছেন বা থেকে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এতে বিমান বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। পাইলট ও কেবিন ক্রুদের বিদেশে অবস্থানকালে ফিরতি ফ্লাইটের আগের সময়টুকু নিয়মকানুন যথাযথভাবে পালনের লক্ষ্যে এই কঠোর নির্দেশনা জারি করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

জানা যায়, গত ৩১ মে বিমানের টরন্টো ফ্লাইটে যাওয়া কেবিন ক্রু সৈয়দা নুসরাত জাহান (বিন্তি) পালিয়ে থেকে যাওয়ার অপচেষ্টা করেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ বিমানের চৌকস ক্যাপ্টেন সাইফুজ্জামান গুড্ডু পেশাগত দায়িত্ব পালনের অবসরে বন্ধুদের সঙ্গে কানাডার অন্টারিও প্রদেশের লিনজি শহরের একটি কটেজ সংলগ্ন হ্রদে ঘুরতে গিয়ে প্রাণ হারান।

জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্স সংস্থা বিমান বাংলাদেশ বিশ্বের বিভিন্ন গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করে। এসব ফ্লাইটে একাধিক কেবিন ক্রু দায়িত্ব পালন করেন। দূরের গন্তব্যে একই দিন ফিরতি ফ্লাইট পরিচালিত হয় না। সাধারণত দুই বা তিন দিন পর হয়। ফ্লাইটের আগ পর্যন্ত পাইলট ও কেবিন ক্রুদের নির্দিষ্ট হোটেলে অবস্থান করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু কোনও কোনও পাইলট ও কেবিন ক্রু নির্দেশনা না মেনে নিজের আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধুর সঙ্গে সময় অতিবাহিত করেন। কেউ কেউ আবার সুযোগ বুঝে সেই দেশে থেকে যান।

গত ৩১ মে বিমানের টরন্টোর ফ্লাইট শেষে পাইলটসহ কেবিন ক্রুরা টরন্টোর ম্যারিয়ট হোটেলে পৌঁছানোর পর কাউকে কিছু না বলে নিরুদ্দেশ হয়ে যান ফ্লাইট স্টুয়ার্ডেজ সৈয়দা নুসরাত জাহান (বিন্তি)। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর কয়েকটি গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত নিউজ হয়। এরপর ফ্লাইট সংশ্লিষ্টরা বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে পরের দিন দুপুরে হোটেলে ফিরিয়ে আনেন বিন্তিকে। এ ঘটনায় তাকে শোকজ করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

বিমান সূত্রে জানা গেছে, শোকজের জবাবে বিন্তি বলেছেন, হোটেল ছেড়ে তিনি কোথাও যাননি। তবে ওই ঘটনার পর বিন্তিকে ডমেস্টিক ফ্লাইট করানো হচ্ছে। কোনও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট করানো হচ্ছে না।