দেশে মব জাস্টিস বা গণপিটুনির ঘটনা ক্রমেই বেড়ে চলেছে এবং এটি তরুণদের দৈনন্দিন জীবনে গভীর প্রভাব ফেলছে—এমনটি মনে করছেন দেশের ৭১ দশমিক ৫ শতাংশ তরুণ। এমন উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) পরিচালিত সাম্প্রতিক এক জরিপে।
‘ইউথ ইন ট্রানজিশন: ন্যাভিগেটিং জবস, এডুকেশন অ্যান্ড চেঞ্জিং পলিটিক্যাল সিনারিও পোস্ট-জুলাই মুভমেন্ট’ শীর্ষক জরিপে দেশের ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ২ হাজার তরুণ-তরুণীর মতামত নেওয়া হয়। এতে ১৭টি কেস স্টাডিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
মব জাস্টিস বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে ১৫ দশমিক ১ শতাংশ তরুণ নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছেন এবং ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ মনে করেন, এই ইস্যু তাদের দৈনন্দিন জীবনে তেমন প্রভাব ফেলছে না।
জরিপে উঠে আসে, সাম্প্রতিক সময়ে আগুন লাগানো, ডাকাতি ও চুরির মতো অপরাধজনিত ঘটনাগুলো নিয়ে ৮০ দশমিক ২ শতাংশ তরুণ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ১২ দশমিক ১ শতাংশ নিরপেক্ষ এবং ৭ দশমিক ৭ শতাংশ এসব বিষয়ে উদ্বিগ্ন নন।
ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা বিষয়ে তরুণদের মতামত ছিল বিভক্ত। ৩৪ দশমিক ৫ শতাংশ মনে করেন, এসব ঘটনা তাদের জীবনে প্রভাব ফেলছে, ২৫ দশমিক ৭ শতাংশ ছিলেন নিরপেক্ষ, আর ৩৯ দশমিক ৯ শতাংশ একমত নন।
নারীবাদ ও উদারপন্থি মতাদর্শের প্রতি সামাজিক প্রতিক্রিয়া একটি উদ্বেগজনক বিষয় হিসেবে দেখছেন ৪৪ দশমিক ২ শতাংশ তরুণ। ৩৫ দশমিক ২ শতাংশ তরুণ এ বিষয়ে নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছেন।
সরকারি পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তন বা বিলম্ব নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন ৩৭ দশমিক ৪ শতাংশ তরুণ। তবে ৪৫ দশমিক ৫ শতাংশ নিরপেক্ষ ছিলেন।
রাজনৈতিক সহিংসতা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংঘর্ষ নিয়ে ৪৬ দশমিক ৭ শতাংশ তরুণ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি, রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্টভাবে গ্রেফতার ও মামলার কারণে দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব পড়ছে বলে মনে করেন ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ তরুণ।
লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রসঙ্গে ৫৩ দশমিক ৬ শতাংশ তরুণ মনে করেন, এটি তাদের জীবনে প্রভাব ফেলছে। ২৮ দশমিক ২ শতাংশ নিরপেক্ষ এবং ১৮ দশমিক ৩ শতাংশ একমত নন।
জরিপটি পরিচালনা করেন সানেম-এর নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান। গবেষণা দলে আরও ছিলেন একরামুল হাসান, শাফা তাসনিম, এশরাত শারমিন, নীলাদ্রি নভিয়া নভেলি এবং মো. রজিব।