‘সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য ম্যালেরিয়া শেষ করুন’

বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস উপলক্ষে সাংবাদিক সম্মেলন২৫ এপ্রিল সোমবার বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস। নবম বারের মতো পালিত হওয়া এবারের বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য ম্যালেরিয়া শেষ করুন।’
দেশে বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ৩২ লাখ ৫০ হাজার জনগোষ্ঠী ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তবে সরকারের সহায়তায় ব্র্যাকসহ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সমন্বিত কার্যক্রমের ফলে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ ও আক্রান্ত মৃত্যুর হার অনেকটাই কমে এসেছে।
শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের এমআইএস  ভবনের সম্মেলন কক্ষে ২৫ এপ্রিল বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবসকে সামনে রেখে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ। সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণের লাইন ডিরেক্টর ও রোগ নিয়ন্ত্রণের পরিচালক ডা. আবুল খায়ের মোহাম্মদ শামছুজ্জামান। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক এম এ ফয়েজ, ব্র্যাকের টিবি, ম্যালেরিয়া ও ওয়াশ কর্মসূচির পরিচালক ড. মো. আকরামুল ইসলাম, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম এর সভাপতি তৌফিক মারুফ প্রমূখ।  স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির মূল্যায়নকারী ডা. আবু নঈম মো. সোহেল । অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন  ডা. মো. নজরুল ইসলাম। জাতীয় ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি ও বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধে ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের লক্ষ্য ২০১৮ সালের মধ্যে দেশে ১৩ টি ম্যালেরিয়াপ্রবণ জেলায় এর প্রকোপ পর্যায়ক্রমে ৮০ শতাংশ কমিয়ে আনা। একই সঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যের কাছাকাছি নামিয়ে আনা। ২০১৫-২০২০ সালের কর্মসূচির উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে জাতীয় পরিকল্পনার কথা প্রবন্ধে তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের স্বপ্ন ম্যালেরিয়ামুক্ত বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে সরকারের সঙ্গে ব্র্যাকের নেতৃত্বে ২১টি এনজিওর একটি কনসোর্টিয়াম সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারিত্বের মাধ্যমে কাজ করছে।মূল প্রবন্ধে ২০০৮ সাল থেকে ২০১৫ সালের তুলনামূলক বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, ২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে ম্যালেরিয়াজনিত মৃত্যুর হার অনেক কম। ২০১৪ সালে যেখানে মৃত্যুর হার ছিল ৪৫ জন, সেখানে ২০১৫ সালে তা কমে ৯ জনে নেমে এসেছে।  সেই সঙ্গে কমে এসেছে ম্যালেরিয়ার আক্রান্তের হার। ২০১৪ সালে আক্রান্তের হার ছিল ৫৭ হাজার ৪৮০ জন, ২০১৫ সালে তা কমে ৩৯ হাজার ৭১৯ জনে নেমে এসেছে।

আরও পড়ুন: সাত ব্যাংক২০১৫ সালে এক পয়সাও মুনাফা হয়নি ৭ ব্যাংকের

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপারিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মশার দেহে পরিবর্তন হচ্ছে। তাই ম্যালেরিয়ার ঝুঁকি একেবারে কমছে না। তবে সরকারি-বেসরকারি কার্যকর উদ্যোগে আশা করছি ২০৩০ সালের আগেই ম্যালেরিয়া অনেকটাই নির্মূল হবে।

ডা. আবুল খায়ের মোহাম্মদ শামছুজ্জামান ‘একটি ওয়ান স্টপ’ কেন্দ্রের মাধ্যমে বাহক বাহিত ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণের ওপর জোর দেন।

সংবাদ সম্মেলনে ড. মো. আকরামুল ইসলাম বলেন, ডায়াগনসিস করে দেখা যায়, বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। তাই ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে আঞ্চলিক সহযোগিতা দরকার।

জেএ/এপিএইচ/