যেভাবে চলছে প্রথমদিনের লকডাউন

দেশের করোনা সংক্রমণরোধে সাত দিনের লকডাউনের প্রথমদিন ছিল সোমবার (৫ এপ্রিল)। আজ অন্যান্য দিনের মতো চিরচেনা অবস্থা না দেখা গেলেও রাজধানীর সড়কে বাস ছাড়া সবই চলাচল করেছে। আর সেই সঙ্গে সড়কে অনেক মানুষও দেখা গেছে। কেউ দৈনন্দিন কাজে বের হয়েছেন, আবার কেউ জীবন-জীবিকার তাগিদে। তবে গণপরিবহনের চাপ কম থাকায় ট্রাফিক সিগন্যালে কাউকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। অন্যান্য দিন সকালে রাস্তায় অফিসগামী যাত্রীদের চাপ থাকলেও সেরকম কিছু দেখা যায়নি আজ।

রাজধানীর কয়েকটি এলাকা ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে। তাছাড়া লকডাউনের মধ্যেও খাবারসহ নিত্যপণ্যের দোকান খোলা ছিল এবং কাঁচাবাজারেও মানুষের সমাগম দেখা গেছে।

ভোর থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে শুরু হয়েছে লকডাউন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরদিন ভোর ৬টা পর্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাসা থেকে বের হতে পারবে না। সেইসঙ্গে বন্ধ থাকবে গণপরিবহন। এছাড়া শপিং মল বন্ধ থাকলেও কাঁচাবাজার খোলা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর রেস্তোরাঁগুলোতে বসে খাবার গ্রহণের ব্যবস্থা না থাকার শর্তে খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

এদিকে সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাস্তায় বাস নেই তবে উল্লেখযোগ্য হারে চলছে প্রাইভেট কার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা এবং মোটরসাইকেল। এছাড়া সড়কে বেশ কিছু অফিসগামী যাত্রীদের স্টাফ বাস চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে এসব বাসে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনও বাস্তব চিত্র দেখা যায়নি। অর্থাৎ সবাই একই সিটে পাশাপাশি বসেই অফিস যাচ্ছেন। পরিবহণের চাপ কম থাকায় রাস্তায় কাউকেই কোনও সিগন্যালে অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। এসব সিগন্যালে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেও একই বিষয় জানা যায়।

কাঁটাবন সিগন্যালে অফিসগামী মাহমুদুর রহমানের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি জানান, বাসা থেকে অন্য দিন কাঁটাবন পর্যন্ত আসতে অন্তত ৪০ মিনিট সময় লাগে। আজকে লেগেছে ১০ মিনিট। রাস্তা একদম ফাঁকা।

গণপরিবহন না থাকায় আবার অন্য পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া গুনছেন অনেকেই। তাদের মতে, অফিস খোলা থাকলে কিছু করার থাকে না। বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই অফিসে যাতায়াত করতে হয়।

অন্যদিকে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, লকডাউনের মধ্যে কেউ কেউ খোলা রেখেছেন খাবারের দোকান। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বসার ব্যবস্থা রাখেননি তারা। ক্রেতারা পার্সেল নিয়ে চলে যাচ্ছেন। ধানমন্ডির স্টার কাবাবের ম্যানেজার নুরুদ্দিন জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই তারা খাবার বিক্রি করছেন। আপাতত কোনও ফ্লোরে বসার ব্যবস্থা নেই।

এদিকে অনেক জায়গায় রাস্তার পাশেই বসেছে ভ্রাম্যমাণ বাজার। সবজি থেকে শুরু করে মাছ-মাংস বিক্রি হচ্ছে এসব ভ্রাম্যমাণ দোকানে। এসব বাজারে লোকসমাগম থাকলেও সামাজিক দূরত্ব মানার ব্যবস্থা চোখে পড়েনি।

ধানমণ্ডির সাত মসজিদ সড়কে এরকম একটি বাজারের মাছ বিক্রেতা জামাল বলেন, আমরা অনেকদিন ধরেই এখানে বসি সকালে। জায়গা কম, তাই একটু কাছাকাছি বসতে হয়। বেশি জায়গা নিয়ে বসলে আবার উঠায়ে দেবে।

এসময় কয়েকজন ক্রেতার মুখে মাস্ক থাকলেও বিক্রেতাদের অনেকের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। এছাড়া বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে লকডাউনের কারণে শপিংমল সব বন্ধ রয়েছে।