লকডাউনে সব ধরনের গণপরিবহন চলাচল বন্ধ। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ব্যক্তিগত যানবাহন নিয়ে বের হওয়াও বারণ। তবে নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করে কিছু প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত দিয়েছে সরকার। কিন্তু কর্মীদের যাতায়াতের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা রেখেনি এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশই। ফলে সকালে অফিসগামী মানুষ পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। সহজলভ্য পরিবহন রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশা পাওয়াটাই যেন সোনার হরিণ। এ সুযোগে রিকশাচালকরা ভাড়া নিচ্ছেন দ্বিগুণের বেশি। সকালে অফিস টাইমের আগে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় এমন চিত্র দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রিকশা চালকদের অধিকাংশই থাকেন নগরীর খিলগাঁও এলাকায়। এই এলাকায় রিকশা বা রিকশা গ্যারেজ মালিকের সংখ্যা অনেক বেশি। ফলে তুলনামূলভাবে এলাকাটিতে রিকশার সংখ্যাও বেশি। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে অফিস শুরুর আগে খালি রিকশার সন্ধান পাওয়া ছিল অনেকটা সোনার হরিণের মতো।
রিকশা না পেয়ে খিলগাঁও রেলগেট থেকে ফকিরাপুল পর্যন্ত হেঁটে এসেছেন আরমান হোসেন। তিনি জনতা ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় কাজ করেন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এই পথটুকুর ভাড়া চাওয়া হচ্ছে দেড়শ টাকা। অথচ ফাঁকা রাস্তায় ১৫ মিনিটের পথ এটি। ৮০ টাকা বলার পরেও রাজি হচ্ছে না। অন্যসময় ৭০-৮০ টাকা দিয়েই যাতায়াত করতাম।
এসময় অফিসগামী বহু মানুষকে পরিবহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। পরিবহন না পেয়ে ভাড়া ভাগাভাগি করে এক সঙ্গে দুই জন যাত্রীকেও রিকশায় উঠে যাতায়াত করতে দেখা গেছে। লকডাউনের প্রথম দিন রিকশায় দুই যাত্রীকে এক সঙ্গে যাতায়াত করতে দেওয়া না হলেও দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার দুই থেকে তিন জন করে যাত্রী পরিবহন করতেও দেখা গেছে। এসময় মোড়ে মোড়ে দায়িত্বপালনকারী পুলিশের সদস্যরা বাধা দেননি।
মালিবাগ রেলগেটের চিত্রও একই। দীর্ঘসময় অপেক্ষা করেও রিকশার সন্ধান পাননি অফিসগামী বহু মানুষ। এসময় যানবাহন না পেয়ে হেঁটেই গন্তব্যে যাত্রা দিতে দেখা গেছে কর্মজীবী মানুষদের। তাদের অভিযোগ, সরকারি নির্দেশ সত্ত্বেও অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কর্মী আনা নেওয়ার জন্য কোনও পরিবহন ব্যবস্থা রাখেনি।
কথা হয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একজন কর্মচারীর সঙ্গে। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের জন্য কোনও পরিবহন ব্যবস্থা রাখা হয়নি। কিন্তু অফিস করতে হবে। যারা পরিবহন সুবিধা পান তারা আনেক আগ থেকেই পেয়ে আসছেন। লকডাউন উপলক্ষে নতুন করে কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি।’
এমনই চিত্র দেখা গেছে প্রায় প্রতিটি এলাকায়। অফিসগামী মানুষের দাবি গণপরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত না করতে পারলেও যেন ভাড়া নিয়ন্ত্রণ করে দেওয়া হয়। এলাকার দুরুত্ব অনুযায়ী যাতে ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন-
দ্বিতীয় দিনের মতো লকডাউন চলছে
‘কঠোর বিধিনিষেধের’ প্রথম দিনে হয়রানির শিকার চিকিৎসকরা