ঢিলেঢালা চেকপোস্ট

দেশে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের শুরুতে যেমন চেকিং দেখা গিয়েছিল সেটি এবার অনেকটাই ঢিমেতালে চলছে। সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন চেকপোস্টে পুলিশ সদস্যদের তৎপর থাকতে দেখা গেলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটি ক্রমেই ঝিমিয়ে আসে। যার ফলে একসময় পুরো ফাঁকা হয়ে পড়ে চেকপোস্টগুলো। পুলিশ সদস্যরা চেকপোস্টের পাশেই অবস্থান করলেও তাদের চেকিং ছিল না। সোমবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানীর কয়েকটি এলাকা ঘুরে এসব চিত্র দেখা যায়।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারি বিধিনিষেধের ষষ্ঠ দিন চলছে আজ। গত ৫ দিন বিধিনিষেধ কার্যকরে রাজধানীর মোড়ে মোড়ে বেশ সক্রিয় দেখা গেছে পুলিশকে। তবে সোমবার সড়কে পুলিশের অবস্থান বেশ নমনীয় দেখা গেছে। এমনকি যেসব জায়গায় প্রতিদিন চেকিং চলতো সেখানেও কোনও কার্যক্রম চোখে পড়েনি। এই কয়দিন এসব পয়েন্টে সাধারণ মানুষ বাধার সম্মুখীন এবং জেরার মুখে পড়লেও আজ তা নেই।

রাজধানীর কাওরান বাজার, বাংলামোটর, কলাবাগান, ধানমন্ডি, পান্থপথ, সাইন্স ল্যাব, শ্যাওড়াপাড়া এলাকায় সরেজমিন এমন চিত্র দেখা যায়। এসব সড়কে গত কয়েক দিনের তুলনায় ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশা, সিএনজি, মোটরসাইকেলের পরিমাণ অনেক বেশি দেখা গেছে। সঙ্গে অপ্রয়োজনে বাসা থেকে বের হওয়া মানুষের আনাগোনাও বেড়েছে। কিন্তু পুলিশ চেকপোস্টগুলোতে কড়াকড়ি কমেছে অনেকখানি। তাছাড়া ধানমন্ডি আবাহনী মাঠের কোণায় এবং মানিক মিয়া এভিনিউতে চেকপোস্টের কার্যক্রম দেখা গেছে। ধানমন্ডির রাসেল স্কয়ারে ট্রাফিক বক্সের কোণায় চলমান বিধিনিষেধের প্রথম ৫ দিন যথেষ্ট চেকিং দেখা গেলেও আজ তা নীরব। একই চিত্র দেখা গেছে পান্থপথ সিগন্যালে এবং কাওরান বাজার সোনারগাঁও হোটেল ক্রসিংয়ে।

একটি বেসরকারি ব্যাংকে কাজ করেন দেবাশীষ। তিনি কঠোর বিধিনিষেধ চলাকালীন অফিসে যাওয়ার পথে কয়েকবার চেকপোস্টে পড়লেও আজকে মাত্র একবার পড়েছেন চেকপোস্টে। সেখানেও পেশা জেনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আবার ফেরার পথেও তিনি তেমন কোথাও বাধার সম্মুখীন হননি। তিনি জানান, অন্যান্য দিনের থেকে আজকে চেকিং অনেক কম।

ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, চেকপোস্টের কার্যক্রম আগের মতোই আছে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, চেকপোস্টে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আজ কিছুটা শিথিল আছে। সরকারের বিধিনিষেধ সত্ত্বেও মানুষ অপ্রয়োজনেও বাইরে যাচ্ছে। তাদের কাছে বের হওয়ার কারণ জানতে চাইলে কিংবা মুভমেন্ট পাস দেখাতে বললেও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে যাচ্ছেন।

পুলিশ সদর দফতরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের এআইজি সোহেল রানা বলেন, জনগণকে সচেতন করতে মাঠে রয়েছে পুলিশ সদস্যরা। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ট্রাফিক পুলিশ ছাড়াও থানা পুলিশ নিজস্বভাবে তাদের চেকপোস্ট পরিচালনা করছে।

শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি জানে আলম মুন্সি বলেন, এই থানাধীন আগারগাঁও-সহ বেশ কিছু জায়গায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে অভিযান চালানো হয়েছে। যারা অপ্রয়োজনে বাইরে বের হচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মামলা দেওয়া হয়েছে। আগারগাঁও ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় অনেকেই অপ্রয়োজনে বাইরে বের হচ্ছেন। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।