সিআরবি রক্ষায় সাংস্কৃতিক প্রতিবাদে মুখর শাহবাগ

বন্দর নগরী চট্টগ্রামের ফুসফুস খ্যাত সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং (সিআরবি)। এটি ১৮৯৫ সালে অবিভক্ত ভারতের বেঙ্গল অ্যান্ড আসাম রেলওয়ের সদর দফতর হিসেবে নির্মাণ করা হয়েছে। ব্রিটিশ আমলের সিআরবি ভবনকে ঘিরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে শতবর্ষের গাছপালা, পাশেই পিচ ঢালা আঁকাবাঁকা রাস্তা; ছোট-বড় পাহাড়-টিলা আর নজরকাড়া বাংলো। সিআরবির শিরীষতলা জায়গাটি নগরীর প্রাণকেন্দ্র। এটি বন্দর নগরী চট্টগ্রামের মানুষের কাছে ‘ফুসফুস’ হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি এখানে বড়সড় একটি হাসপাতাল নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। 

এই হাসপাতাল নির্মাণকে প্রাণ-প্রকৃতির হুমকি আখ্যা দিয়ে সাংস্কৃতিক সমাবেশ করছে সিআরবি রক্ষা আন্দোলন। এই সিআরবি রক্ষায় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিবাদে মুখরিত রয়েছে শাহবাগ।

শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে চারটায় ‘প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে বাণিজ্যিক স্থাপনা বন্ধ কর, সিআরবি বাঁচাও’ ব্যানারে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদের আয়োজন করেছে সিআরবি রক্ষা আন্দোলন। 

অনুষ্ঠান শুরু হয় চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রতিবাদী গানের মাধ্যমে। থিয়েটার বায়ান্ন ‘হিচকী’ নাটক পরিবেশন করে। ইসরাত শিউলী কবিতা আবৃত্তি করেন, নাচ ও গান পরিবেশন করে চারণ শিল্পীগোষ্ঠী। এ ছাড়া চিত্রশিল্পীরা ছবি আঁকার মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান।

সমাবেশে সিআরবি রক্ষার সমন্বয়ক মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘উচ্চ আদালত হাতিরঝিলকে ঢাকার ফুসফুস ঘোষণা করে সেখানে সকল ধরনের বাণিজ্যিক স্থাপনা নিষিদ্ধ করেছে। ঠিক তেমনই বর্তমান আইন, সংবিধানে এখানে স্থাপনা করার কোনও অবকাশ নেই। তারপরেও পুরোপুরি দুর্নীতির মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ এই স্থাপনা দিয়েছে, আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’

ডা. হারুনুর রশীদ বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে একটা প্রশ্ন আসতে পারে এই করোনাকালে কেন আমরা হাসপাতালের বিরোধিতা করছি। এই করোনাকালে হাসপাতালের সঙ্গে সঙ্গে বন ও পরিবেশ বাঁচাতে হবে। পুঁজিবাদী কৃষির কারণে এই করোনা হয়েছে। বন রক্ষা, পরিবেশ রক্ষা, গাছ রক্ষা না করে করোনাকে মোকাবিলা করার কোনও পদ্ধতি আমার জানা নেই। তাই সিআরবিতে গাছ কেটে হাসপাতাল করার কোনও অবকাশ নেই। সুতরাং এই গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে।’