সেই জলাধার বরাদ্দ ‘পর্যালোচনা’ করবে রেল

রাজধানীর কুড়িল ফ্লাইওভার সংলগ্ন জলাধারে ৫ তারকা হোটেল নির্মাণের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে জমি বরাদ্দ দিয়েছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে। সে অনুযায়ী হোটেল নির্মাণের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছিল বরাদ্দপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান মিলেনিয়াম হোল্ডিং লিমিটেড। বিষয়টি জানতে পেরে জলাধার রক্ষায় অভিযান পরিচালনা করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। তিনি নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়ে সেখান থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেন। এ অবস্থায় বরাদ্দটি পুনরায় বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রেলওয়ের মালিকানাধীন রাজধানীর জোয়ার সাহারা মৌজার ১ দশমিক ৮৪ একর জায়গায় একটি ৫ তারকা হোটেল নির্মাণের জন্য মিলেনিয়াম হোল্ডিংস লিমিটেডকে বরাদ্দ দেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে। এজন্য গত ১৩ ডিসেম্বর রেলের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. সফি উল্যাহ স্বাক্ষরিত একটি পত্র মিলেনিয়াম হোল্ডিংস লিমিটেড বরাবর ইস্যু করা হয়।

তবে উত্তর সিটি করপোরেশন জানিয়েছে জায়গাটি জলাধার হিসেব রয়েছে। আইন অনুযায়ী কোনও জলাধার ভরাট বা শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। তাছাড়া ওই এলাকায় স্থাপনা নির্মাণ করা হলে আশপাশে জলাবদ্ধতা দেখা দেবে। এতে নিকুঞ্জ ও কুড়িলসহ পুরো এলাকা তালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিষয়টি বুঝতে পেরে গত বৃহস্পতিবার অভিযানে যান মেয়র আতিকুল ইসলাম। এসময় এলাকাবাসীও জলাধার রক্ষায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

বিষয়টি নিয়ে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, রেল সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর ও মহা-পরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদারের সঙ্গে কথা বলেছেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম। এসময় তিনি জলাধার রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি ও আইনের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। পাশাপাশি নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়ে স্থাপনাগুলো ভেঙে দেন মেয়র। পরে রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, বিষয়টি তারা পুনরায় বিবেচনা করবে। তবে বরাদ্দে কোনও আইন অমান্য করা হয়নি বলেও দাবি রেলের।413fc481-dfca-462d-8b27-aefc053a23ae_1

এসময় মেয়র বলেন, আমাদের কর্মকর্তারা অনেক সময় সরেজমিন না এসে অফিসে বসেই ফাইলে সই করে থাকেন। যারা এটা অনুমোদন দিয়েছেন তারা দেখেননি যে এটা জলাধার। জলাধার ভরাট করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। আমি আশা করি রেলওয়ে এটি পুনরায় বিবেচনা করবে। আমরা কোনওভাবেই জলাধার ভরাট করতে দিতে পারি না। এটা রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমারা পরিদর্শন করে দেখবো। শুনেছি ওই জমিটি জলাধার। কারণ দীর্ঘদিন ধরে একটি জমি অব্যবহৃত থাকলে তখন অনেকেই সেখান থেকে অনেক সময় মাটি কেটে নেয়। জমি নিচু হয়ে যায়। আর মেয়র সাহেব যেদিন ওই জায়গাটিতে গিয়েছেন তার আগের দিন প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলে অনেক জমিতে পানি জমে যায়। আর আমরা নিয়ম নীতি মেনেই জমিটি বরাদ্দ দিয়েছি। উনি (মেয়র) উনার পয়েন্ট অব ভিউ থেকে বলেছেন। আমরা আমাদের পয়েন্ট অব ভিউ থেকে বলবো। তারপর আশা করি সমাধান হবে।1bc48569-7c95-4372-b9e2-f806875e89c1