ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের টয়লেট ব্যবহারের অযোগ্য

ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের টয়লেটের অবস্থা খুবই শোচনীয়। মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় সরেজমিনে ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নতুন ভবন ও পুরাতন ভবনে দেখা যায়, দুটো ভবনের শৌচাগারের অবস্থা একেবারেই ব্যবহারের অযোগ্য। মলমূত্রে পুরো শৌচাগার নোংরা অবস্থায় পড়ে আছে। ময়লা আবর্জনা জমে আছে পুরাতন ভবনের প্রত্যেকটি শৌচাগারে। এছাড়া হাত ধোয়ার জন্য সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার কোনও কিছুই নেই। কোনও টিস্যুর ব্যবস্থাও নেই। হাত মুখ পরিষ্কার করার বেসিন ভাঙা ও অপরিষ্কার। সেখানে আয়নাও নেই। শৌচাগারের পুরো ফ্লোরে স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে আছে।

নতুন ভবনের শৌচাগার পুরাতন ভবনের শৌচাগারের চেয়েও বেশি খারাপ অবস্থায়। শৌচাগারের চারপাশে আবর্জনা পড়ে আছে। দুর্গন্ধের কারণে মানুষকে নাক চেপে ধরে জরুরি কাজ সারতে হচ্ছে। প্রথম শৌচাগারে প্রবেশ করে দেখা যায়, বন্ধ কল থেকে টিপটিপ করে পানি পড়ছে। বদনার হাতল ভাঙা। শৌচাগারের উপরিভাগে শুকনো মল জমে আছে। এছাড়াও মুখ পরিষ্কার করার বেসিনে পানের পিক মানুষের কফসহ নোংরা অবস্থায় পড়ে আছে।

জজ কোর্টে চরম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ

আদালত প্রাঙ্গণে আসা নজরুল ইসলাম নামের একজন বলেন, জজ কোর্টে এসেছিলাম আগাম জামিনের আবেদন করতে। টয়লেটে গিয়েছিলাম। কিন্তু টয়লেটের পরিবেশ দেখে আমার বমি চলে এসেছে। এটা এতটাই নোংরা আর অপরিষ্কার যে কোনও সুস্থ মানুষ এখানে প্রবেশ করলে অসুস্থ হয়ে পড়বে। সাবান, টিস্যু কিছুই নেই। পানির কলটাও ঠিক নেই। স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থা নেই। আদালতের মতো একটা জায়গায় এমন জঘন্য টয়লেট থাকবে তা কখনো আশা করিনি। কর্তৃপক্ষের এদিকে নজর দেওয়া উচিত।

মুক্তা বেগম নামের আরেকজন বলেন, আমার স্বামী তার ভাইদের জমি-জমা সংক্রান্ত মামলায় গ্রেফতার হয়েছে। আজ তাকে আদালতে আনা হয়েছে। তামান্না তাকে দেখতে এসেছি। আমি ও আমার মেয়ে দোতলার টয়লেটে যাই। কিন্তু টয়লেটের অবস্থা দেখে আমি ওখান থেকে ফিরে এসে পাশে ভিক্টোরিয়া পার্কের পাবলিক টয়লেটে যাই। আদালতের টয়লেটের নোংরা অবস্থা যা ভাষায় ব্যক্ত করা যাবে না। টয়লেটে নারীদের জন্য বিশেষ কোনও সুবিধা নেই। সাবান, পানি, টিস্যু কিছুই নেই। বাড়তি আর কী  সুবিধা আশা করবো। এই জায়গায় নারীদের জন্য বিশেষ সুবিধাসহ ন্যাপকিনের ব্যবস্থা রাখার দরকার ছিল।

জজ কোর্টে চরম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ

এ বিষয়ে পিপি আবদুল্লাহ আবু বলেন, আদালত প্রাঙ্গণে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আসে। শত শত মানুষ এই টয়লেট ব্যবহার করে। ওগুলো তো গণশৌচাগার, এই জন্য এটা নোংরা ও অপরিষ্কার হয়ে যায়। তবে কর্তৃপক্ষের উচিত এখানকার সবগুলো টয়লেট পরিচ্ছন্নতা কর্মী দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৩-৪ বার পরিষ্কার করা। কারণ আদালতের অভ্যন্তরে জনসাধারণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি আদালত কর্তৃপক্ষকেই দেখভাল করতে হবে।

সাবান ও টিস্যু না থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, আদালতের দায়িত্বরত সুইপার যারা আছেন তাদের উচিত সাবান টিস্যু শেষ হলেই আবার সেগুলো রাখা। সর্বসাধারণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য এ নিয়ে আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করবো।

ছবি: নাসিরুল ইসলাম।