উদ্বোধনের আগেই বেহাল দশা ‘মিরপুর ১০’ মেট্রো স্টেশনের

গত ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর ধাপে ধাপে খুলছে উত্তরা উত্তর থেকে আগারগাঁওয়ের মাঝের সব মেট্রো স্টেশন। ইতোমধ্যে উত্তরা সেন্টাল ও পল্লবীর স্টেশন চালু হয়েছে। আগামী ১ মার্চ মিরপুর ১০ এবং ২৬ মার্চ মিরপুর ১১ কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়া স্টেশনও যাত্রী ওঠানামার জন্য খুলে দেওয়া হবে।

তবে চালুর আগেই বেহাল অবস্থা মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশনের। যত্রতত্র ময়লা, প্রস্রাবের দুর্গন্ধ, অবৈধ ফুটপাত ব্যবসায়ীদের দ্বৈরথে এখনই নতুনত্ব হারাচ্ছে স্টেশনটি। নষ্ট হচ্ছে এর দেয়াল, গ্রিল ও ফুটপাতের অংশ।

গত বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) এবং রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ স্টিলের পিলারে পানের পিক, চুনসহ নানা ময়লার দাগ। প্রবীন ও বয়স্কদের জন্য তৈরি করা লিফটের দেয়াল ঘিরে জমছে ময়লার স্তুপ। তার পেছনেই চলে মূত্র ত্যাগ।

বিকাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই স্টেশন দখলে নেয় ফুটপাত ব্যবসায়ীরা। স্টেশনে উঠা নামার সিঁড়ির মুখ পর্যন্ত ঢাকা পড়ে যায় এসব ব্যবসায়ীদের দোকানের আড়ালে। স্টেশনের পিলারে দড়ি বেঁধে টাঙানো হয়েছে কাপড়। ফলে পথচারীরা বাধ্য হয়েই ফুটপাত ছেড়ে ঝুঁকি নিয়ে সড়ক দিয়ে হাঁটাচলা করছে।

মেট্রোরেলের নিচে অবস্থান করা হকারদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশন চালুর আগে তাদের সরে যেতে বলেছে। অথচ চালুর আর ৩ দিন বাকি, এখনও কেউ এসে সরানোর উদ্যোগ নেয়নি।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক হকার বলেন, ‘এই স্টেশন চালু হলে আমাদের সরে যেতে হবে জানি। কিন্তু কবে সরতে হবে তা কেউ বলে নাই। এজন্য যতদিন সম্ভব এইখানে দোকান দিয়ে রাখছি। বললে সরে যাবো।’

যতদিন ফুটপাতে দোকান রাখা যায় ততদিনই টাকা উঠে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এইখানে দোকান না থাকলে তো তাদেরও (হকার সিন্ডিকেট) লস। তাই তারাও সরানোর এত গুরুত্ব দিতেছে না। বলতাছে সময় হলে সরায়া দিবে। এই কয়েক দিন নিশ্চিন্তে থাকার জন্য।’

আশপাশের পরিবেশ নষ্ট হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তার ভাষ্য, ‘একটা জায়গায় বাজার বইলে ওই জায়গার আশপাশ তো একটু ময়লা হয়।’

এই বিষয়ে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) মো. ইফতেখার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সড়কের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ও হকারের বিষয়টি দেখবে সিটি করপোরেশন। আমরা মেট্রোরেল ও স্টেশনের কার্যক্রম দেখবো। তবে আমরা ইতোমধ্যে ১০ নম্বর মেট্রো স্টেশন চালুর সকল প্রস্তুতি নিচ্ছি। চালু হলে ওখানে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা কর্মী থাকবে। আশা করি তখন এই বিষয়গুলোর সুন্দর সমাধান হবে।’

মেট্রোরেল ও স্টেশন সুন্দর রাখতে জনগণের বড় ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা যত যাই করি, জনগণ যারা এটি ব্যবহার করবে তাদেরও সচেতন হতে হবে। সরকারের এত সুন্দর একটা প্রকল্প সবারই উচিত এটির প্রতি আরও যত্নশীল হওয়া।’