হঠাৎ বৃষ্টিতে মন্দিরে মন্দিরে ভোগান্তি

ঢাকার আকাশ পরিষ্কার ছিল সোমবার (২৩ অক্টোবর) সকাল থেকে। রোদের তাপে কেটে গিয়েছিল বৃষ্টির সম্ভাবনাও। কিন্তু দুপুরের পর রাজধানীর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে ওঠে। হঠাৎ শুরু হওয়া বৃষ্টিতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ভোগান্তিতে পড়েছেন রাজধানীর মন্দিরগুলোতে পূজা দিতে আসা সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ ও দর্শনার্থীরা। এ সময় মন্দিরগুলোর আশপাশে ও ভেতরের মূল প্যান্ডেলে কাদা-পানি জমে থাকতে দেখা গেছে।

সোমবার মহানবমীর দিনে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির, রমনা কালী মন্দির এবং জগন্নাথ হলের পূজামণ্ডপ ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

রমনা কালী মন্দিরে দেখা যায়, মন্দিরের গেট থেকেই জলজট। সামনের রাস্তায় পানি জমে যাওয়ায় হেঁটে আসা দর্শনার্থীরা ভোগান্তিতে পড়েন। পূজা উপলক্ষে মন্দিরের সামনে গড়ে ওঠা অস্থায়ী দোকানগুলোতেও জমে গেছে পানি। অনেক দোকানিকে পানি সেচতে দেখা গেছে। মণ্ডপের ভেতরে মূল প্যান্ডেলেও পানি জমেছে। সেখানে দর্শনার্থীদের পানি ও কাদা মাড়িয়ে চলাফেরা করতে দেখা গেছে।

রমনা কালী মন্দিরের সামনে পানি জমেছে

এই মন্দিরে ঘুরতে আসা পরীবাগের বাসিন্দা জয়ন্ত সাহা বলেন, ‘পরিবার নিয়ে মন্দিরে ঘুরতে এসে বৃষ্টির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছি। সামনের রাস্তায় পানি জমে থাকায় এবং ভেতরে কাদা হয়ে যাওয়ায় সন্তানদের নিয়ে হাঁটতেও সমস্যা হচ্ছে।’

ঢাকেশ্বরী মন্দিরে দেখা গেছে, মূল প্যান্ডেলের ওপর ত্রিপল দেওয়া থাকলেও এর ফাঁক গলে পানি ঢুকছে ভেতরে। এই মন্দিরে দর্শনার্থীদের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি হওয়ায় সামনের হাঁটার রাস্তা এবং ভেতরেও কাদা-পানিতে মাখামাখি। বৃষ্টির সময় মূল প্যান্ডেলের ভেতরে জায়গা না পাওয়ায় অনেক দর্শনার্থীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজেছেন। এমনই এক দর্শনার্থী তৃষ্ণা রানী সাহা বলেন, ‘হঠাৎ বৃষ্টি আসায় কোথাও দাঁড়াতে না পেরে ভিজে গেছি।’

বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মন্দিরে আসা সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ ও দর্শনার্থীরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে বৃষ্টির সময় দর্শনার্থীরা হলের মূল ভবনগুলোতে অবস্থান নেন। তবে বৃষ্টির কারণে পূজা উপলক্ষে তৈরি হওয়া অস্থায়ী দোকানগুলোতে অনেক পণ্য নষ্ট হতে দেখা গেছে। জগন্নাথ হলের পুকুর পাড়ে পাপড় বিক্রেতা শামসুল আলম জানান, হঠাৎ বৃষ্টি আসায় তার দোকানের পাপড়গুলো ভিজে গেছে। এছাড়া আরও কয়েকটি দোকানে পানি জমতে দেখা গেছে।

এদিকে মন্দিরগুলোতে জমে যাওয়া পানি অপসারণে স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। রমনা কালী মন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘হঠাৎ বৃষ্টিতে পানি জমে যাওয়ায় দর্শনার্থীদের সাময়িক অসুবিধা হলেও দ্রুত পানি নিষ্কাশনে স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করছেন। এছাড়া সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্টদের আমরা সহযোগিতার অনুরোধ জানিয়েছি।’

দোকানের সামনে জমেছে পানি

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পূজামণ্ডপগুলোতে যেন পানি জমে না যায়, সে জন্য আমাদের লোকজন কাজ করছে। দর্শনার্থী একটু বেশি হওয়ায় বৃষ্টিতে রাস্তায় কাদা জমে গেছে।’