পুরনো রূপে ফিরছে ঢাকার বায়ু দূষণ

ঈদের ছুটিতে রাজধানী ঢাকায় বায়ু দূষণ কমলেও শনিবার (৭ মে) আবারও তা বেড়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বায়ুর মান যাচাই-বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ‘এয়ার ভিজুয়াল ইনডেক্স’ এর মাত্রা অনুযায়ী,  ঢাকায় ৩ মে ঈদের দিন যেখানে বায়ু দূষণের মাত্রা ছিল গড়ে ২১ থেকে ৪৫ একিউআই, সেখানে শনিবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৯।

ঈদের ছুটির পর বৃহস্পতিবার অফিস খুললেও মানুষের চলাচল ছিল কম। শুক্র ও শনিবার বন্ধ থাকায় আজও চলাচল কম। কিন্তু আগামীকাল রবিবার (৮ মে) থেকে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস আদালত, স্কুল-কলেজ খুলে যাচ্ছে। ফলে রাজধানীতে আগের মতো বাড়বে যানবাহন চলাচলের চাপ। এতে করে দূষণের মাত্রা আরও বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ঈদের ছুটির আগে কয়েক দিন ধরে ঢাকার বায়ুমান খুব খারাপ অর্থাৎ অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় ছিল। এরপর গত ৩ মে ঈদের দিনে নির্মল বায়ু পেয়েছে ঢাকাবাসী। এদিন দুপুর পর্যন্ত ঢাকায় বায়ুর মান সূচক ছিল ২১। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঈদ উপলক্ষে প্রায় এক কোটি মানুষ রাজধানী ছেড়েছেন। ছুটির দিনগুলোতে যানবাহন চলাচলও ছিল কম। এছাড়া নির্মাণ কাজ ও কলকারখানা বন্ধ থাকায় বন্ধ ছিল বায়ু দূষণের বড় উৎসগুলো। এছাড়া ঈদের সকালে ঝড় বৃষ্টি হওয়ায় কমে যায় দূষণ।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বায়ুর মান যাচাই বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ‘আইকিউ এয়ার’ তখন জানায়, মঙ্গলবার (৩ মে) সকাল ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত ঢাকায় বায়ুর মান সূচক ছিল ২১। ওই সময়ে বায়ুতে মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ‘পিএম ২.৫’ প্রতি ঘনমিটারে ছিল ৫ মাইক্রোগ্রাম। বিশেষজ্ঞদের মতে যা ‘ভালো’। তবে দুপুরের পর তা বেড়ে ৫০ পর্যন্ত উঠেছিল।

কিন্তু শনিবার (৭ মে) আবারও রাজধানীর বায়ুর মান মাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ১২৯,  যা মোটামুটি ভালো বলা চলে। বিশ্বের মধ্যে সপ্তম অবস্থানে এসেছে আজকের ঢাকা। প্রথম অবস্থানে আছে ভারতের মুম্বাই, যাদের দূষণের মাত্রা ১৬৭। যাকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অস্বাস্থ্যকর।

বায়ু মান বিশেষজ্ঞ এবং স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বাংলা ট্রিবিউনকে  বলেন, ‘ঈদের দিন নির্মল বায়ুর প্রথম কারণ ছিল, সকালে ঢাকা ও আশপাশে বৃষ্টি হওয়ায় বায়ুর মান ভালো হয়েছে। দ্বিতীয় কারণ হলো, বায়ুপ্রবাহের গতি প্রতি ঘণ্টায় ১২ থেকে ১৫ কিলোমিটার, যা কখনও কখনও ২৫ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠছে। বায়ুপ্রবাহ বেশি হলে বায়ুর মান ভালো হয়। এদিকে প্রচুর মানুষ রাজধানী ছেড়েছে, তাদের কারণে বায়ু দূষণও কমেছে। এ ছাড়া ঈদের ছুটির কারণে শিল্পকারখানা, নির্মাণকাজ ও ইটভাটা বন্ধ ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে আস্তে আস্তে আবার সব ফিরে আসছে।  ফলে বাড়ছে দূষণের মাত্রা। আগামীকাল সব খুলে গেলে এ মাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন।