ঈদের ছুটিতে বিশুদ্ধ বায়ু পেলো রাজধানীবাসী

এবার ঈদের ছুটিতে প্রতিবছরের মতো বিশুদ্ধ বায়ু পেয়েছে রাজধানীবাসী। ঈদের এই সময়গুলোতে বায়ুদূষণকারী ইট ভাটা, কলকারখানা বন্ধ থাকা এবং গাড়ির চলাচল কম থাকায় এই বায়ু পায় রাজধানীবাসী।

এদিকে ঈদের সময়ের ৬০ দিন মধ্যে ঢাকার মানুষ মাত্র ৬ দিন বিশুদ্ধ বায়ু সেবন করে। দুই ঈদের মোট ১২ দিন এবং ঈদের আগের এবং পরের মোট ৪৮ দিন হিসেবে এই ৬ দিন ধরা হয়েছে। স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।

তারা জানায়, বিশ্বের বায়ুদূষণ পর্যবেক্ষণকারী যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা এয়ার ভিজ্যুয়ালের পর্যবেক্ষণে (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) গত ৭ বছরের (২০১৬, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯, ২০২০, ২০২১ এবং ২০২২) মোট ৬০ দিনের (দুই ঈদের মোট ১২ দিন এবং ঈদের আগের এবং পরের মোট ৪৮ দিন) ডাটা বিশ্লেষণ করে তারা দেখে যে, ৬০ দিন মধ্যে ঢাকার মানুষ মাত্র ৬ দিন বিশুদ্ধ বায়ু সেবন করে।

এদিকে ২০১৭ সালের ঈদুল ফিতরের পরের ২ দিন বায়ুমান সূচক ছিল যথাক্রমে ৪২ ও ৩৬ এবং ২০১৯ সালের ঈদুল ফিতরের পরের দিন বায়ুমান সূচক ছিল ৩৭, ২০১৯ সালে ঈদুল আজহার পরের ২ দিন বায়ুমান সূচক ছিল ৪৯ ও ২২, আবার ২০২১ সালে ঈদুল আজহার এক দিন পর বায়ুমান সূচক ৪৪ ছিল।

আর এবার ২০২২ সালে ঈদের একদিন পর  মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় বায়ুমান সূচক দাঁড়িয়েছে ৩৩ এ। এই মাত্রার অর্থ হচ্ছে ঈদের ছুটির মধ্যে রাজধানীবাসী বিশুদ্ধ বায়ু সেবন করেছে।

এদিন সর্বোচ্চ দূষণ ছিল সৌদি আরবের রিয়াদে ১৬১। এছাড়া দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে ছিল পাকিস্তানের দুই শহর। লাহোরে ১৫৮, করাচিতে ১১৯। 

বায়ুদূষণ বিশেষজ্ঞ ড. কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, প্রতি বছরই ঈদের দিন এবং ঈদের পরের দিন ঢাকা শহরের বিভিন্ন রুটের গণ পরিবহণ চলাচল বন্ধ থাকে। যাতায়াতে বেশির ভাগ মানুষ রিকশা কিংবা নিজস্ব পরিবহন ব্যবহার করে। গত ৭ বছরেই ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার সময় ছিল মে, জুলাই, অগাস্ট এবং সেপ্টেম্বর মাস এই সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। বায়ুদূষণের পরিমাণ কমে আসার অন্যতম একটি কারণ এটি। অন্যদিকে এই সময় ঢাকার আশেপাশের বৈধ এবং অবৈধ বেশিরভাগ ইটের ভাটাগুলো বন্ধ থাকে। চলতি বছর ঈদুল আজহার ছুটিতে বিশুদ্ধ বায়ু সেবন করেছে রাজধানীবাসী।

এদিকে আরেক বিশেষজ্ঞ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুস সালাম বলেন, ঈদের ছুটিতে সব সময় এই ধরনের অবস্থা তৈরি হয়। আগামী সপ্তাহে যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে আবার দূষণ বেড়ে যাবে। সরকার তো জানেই কী কী কারণে দূষণ বাড়ে সেগুলোর বিষয়ে কঠোর হলেই এই দূষণ কমানো সম্ভব।