মুসাফিরের নামাজ কয় রাকাত?

জীবনচক্রে নানা কারণে মানুষকে সফর করতে হয়। সাধারণ সময়ের চেয়ে সফরের সময়টি কষ্টের। এজন্য সফরকারীর নামাজে ছাড় দিয়েছে ইসলাম। তবে এই ছাড়ের জন্য শরিয়তে সফরের নির্দিষ্ট একটি সময় ও দূরত্ব নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় সফর হলো- কোনও ব্যক্তির তার অবস্থানস্থল থেকে ৪৮ মাইল তথা ৭৮ কিলোমিটার দূরে কোথাও সফরের নিয়তে বের হয়ে তার এলাকা পেরিয়ে যাওয়া এবং সেখানে ১৫ দিনের কম সময় থাকার নিয়ত করা।

যার মধ্যে এই শর্ত পাওয়া যাবে তিনিই শরিয়তের দৃষ্টিতে একজন মুসাফির গণ্য হবেন। আর মুসাফির নামাজে কসর করার সুযোগ পাবেন। আরবি কসর শব্দের অর্থ হলো- কম করা, কমানো। পরিভাষায়- সফরের সময়ে চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ দুই রাকাত পড়াকে কসর বলে।

এখন প্রশ্ন হলো- মুসাফির যদি চার রাকাতের ফরজ নামাজ দুই রাকাত কসর না পড়ে ভুলে যান এবং চার রাকাত পড়ে ফেলেন, তাহলে কি তার নামাজ সহি হবে?

এর উত্তর হচ্ছে- অবস্থা যদি এমন হয় যে- দুই রাকাত কসরের বদলে মুসাফির ব্যক্তি ভুলে চার রাকাত পড়ে ফেলেছেন এবং নামাজের মধ্যেই বিষয়টি তার স্মরণ হলো, তাহলে তিনি সাহু সেজদা দিয়ে নামাজ সমাপ্ত করবেন। 

আর পরিস্থিতি যদি এমন হয়- নামাজের ভেতরে তার বিষয়টি স্মরণ হলো না, মানে তিনি কসরের বদলে পুরো চার রাকাতই পড়ে ফেলেছেন, তাহলে এক্ষেত্রে তার ফরজ আদায় হয়ে গেছে বলে ধরা হবে।

কিন্তু মুসাফির যদি প্রথম বৈঠক না করে থাকেন (দুই রাকাতের পর বসা), তাহলে তাকে ওই নামাজ (দুই রাকাত) পুনরায় ফের আদায় করতে হবে। কারণ, যেকোনও নামাজে শেষ বৈঠকটি ফরজ। নামাজে ফরজে ভুল করলে সাহু সেজদাতেও নামাজ সহি হয় না; বরং ফের তা আদায় করতে হয়।

তথ্যসূত্র : জাওয়াহিরুল ফিক্বহ ১/৪৩৬, আহসানুল ফাতাওয়া ৪/১০৫, মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ২/৫৪১, শরহুল মুনইয়াহ ৫৩৯ ও আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৮।

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী; শিক্ষক, মারকাযুদ দিরাসাহ আল ইসলামিয়্যাহ, ঢাকা।