ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে বুধবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘পঁচাত্তরের (১৯৭৫) পর ২১ বছর যারা ক্ষমতায় থেকেছে তারাই বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে, পুরস্কৃত করেছে। তাদের বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে চাকরি দিয়েছে। খালেদা জিয়া খুনিদের সংসদ সদস্য বানিয়ে সংসদে বসিয়েছে। উনি বঙ্গবন্ধুর খুনি হুদা, রশীদকে সংসদ সদস্য বানিয়ে বিরোধী দলের আসনে বসিয়েছিল। যুদ্ধাপরাধীদের হাতে পতাকা তুলে দিয়ে মন্ত্রী বানিয়েছিল।’
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে নিয়ে অপপ্রচার করা হয়েছে অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার বাবা ত্যাগী একজন মানুষ ছিলেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হয়েছে। আমাদের সবার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হয়েছে।’
১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসার পর তাকে বঙ্গবন্ধু ভবনে ঢুকতে দেওয়া হয়নি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাকে বঙ্গবন্ধু ভবনে ঢুকতে দেয়নি। ওই সময় খুনি জিয়া আমাকে বাড়ি দেওয়ার প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু একজন খুনির কাছ থেকে বাড়ি নিতে প্রস্তুত ছিলাম না। ওই সময় আমার কোনও বাড়ি ছিল না; মেজ ফুপু, ছোট ফুপুর ভাড়া বাসায় থাকতাম। সেটাও ভালো। কিন্তু খুনির হাত থেকে বাড়ি নেওয়ার প্রবৃত্তি ছিল না।’
২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপি মানুষের ওপর নির্যাতন করেছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বিএনপি মানুষের কল্যাণ করতে পারে না। তারা শুধু ধ্বংস করতে পারে, অত্যাচার করতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ যে আদর্শ ও উদ্দেশ্য নিয়ে স্বাধীন হয়েছিল, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর তা সম্পূর্ণ ভিন্ন পথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়েছে। পঁচাত্তরের পর যে সরকারই এসেছে, মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নে তারা কোনও কাজ করেনি। তারা ইতিহাস বিকৃত করেছে, শহীদের রক্তকে অবমাননা করেছে। ক্ষমতাকে তারা বানিয়েছে ভোগের বস্তু।’ এসময় তিনি বিএনপি ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালেও রাজপথে আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও চালিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় আছে বলেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল, উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বের সবার কাছে বিস্ময়।’ নির্বাচন সামনে চলে আসায় বিএনপি বিভিন্ন ধরনের অজুহাত দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, ফারুক খান, মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।
আরও পড়ুন-
রাষ্ট্র নিজেই সন্ত্রাস করছে: মির্জা ফখরুল
৪০ বছরে পা রাখছে বিএনপি, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে থাকবে ‘ভিন্নতা’