দুর্গোৎসবের মানবকল্যাণ প্রতিষ্ঠার শিক্ষাকে আত্মস্থ করতে হবে: খালেদা জিয়া

খালেদা জিয়াশারদীয় দুর্গোৎসবের সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের এই উৎসবের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, ‘এই উৎসবের মূল শিক্ষা অসুর বধের মাধ্যমে মানবকল্যাণের প্রতিষ্ঠা। সেই শিক্ষাকে আত্মস্থ করে এই উৎসবের আনন্দ সবাই মিলে ভাগ করে নিতে হবে।’
শারদীয় দুর্গা পূজা উপলক্ষে এক বাণীতে বিএনপি চেয়ারপারসন এসব কথা বলেন। বিএনপি দেশের প্রতিটি মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ উল্লেখ করে বাণীতে তিনি বলেন, ‘আমরা সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু তত্ত্বে বিশ্বাস করি না। আমরা সবাই বাংলাদেশি— এটাই হোক আমাদের সবচেয়ে বড় পরিচয়।’ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রহুল কবির রিজভীর সই করা এক প্রেস বিজ্ঞতিতে এ কথা বলা হয়েছে।
দুর্গা পূজা ও আসন্ন বিজয়া দশমী উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি আপনাদের সবার সুখ-শান্তি ও কল্যাণ কামনা করি। যুগ যুগ ধরে শারদীয় দুর্গা পূজা উপমহাদেশ ও বাংলাদেশসহ অন্যান্য জনগোষ্ঠীর হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হিসেবে সাড়ম্বরে পালিত হয়ে আসছে।’
খালেদা জিয়া আরও বলেন, ‘যেকোনও ধর্মীয় উৎসবই মানুষে মানুষে নিবিড় বন্ধন রচনা করে ও ভ্রাতৃত্ববোধ জাগিয়ে তোলে। সব ধর্মের মর্মবাণী শান্তি ও মানবকল্যাণ। মানুষ হিসেবে হিংসা-বিদ্বেষ ও রক্তারক্তি ত্যাগ করে সমাজের শান্তি ও সাম্য প্রতিষ্ঠায় ব্রতী হওয়া আমাদের সবার কর্তব্য। দুর্গা পূজার অন্তর্নিহিত বাণী হচ্ছে— হিংসা, লোভ ও ক্রোধরূপী অসুরকে বিনাশ করে সমাজে স্বর্গীয় শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যেখানে ন্যায় ও সুবিচার নিশ্চিত হবে। নির্যাতন, নিপীড়ন ও প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার মধ্য দিয়ে যারা সমাজকে, মানব সভ্যতাকে ধ্বংস করতে চায়, দুঃশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়; তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে মানবকল্যাণ প্রতিষ্ঠাই এই উপাসনার মূল লক্ষ্য। সেই শিক্ষাকে আত্মস্থ করে দুর্গা পুজার উৎসবের আনন্দ সবাই মিলে ভাগ করে নিতে হবে।’
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাম্প্রদায়িক উসকানি, ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দেবালয়ে আক্রমণ ও ভাঙচুর অনেক বেশি সংঘটিত হচ্ছে দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘এবারের দুর্গা পূজার আগেও দেশের বেশকিছু স্থানে মন্দির ও হিন্দু বাড়িতে আক্রমণ করা হয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী এসব ঘটনায় ক্ষমতাসীনরা জড়িত। আমি এসব অশুভ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি ও তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’ এসময় খালেদা জিয়া বাংলাদেশকে ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ উল্লেখ করে যেকোনও ধরনের অশুভ তৎপরতা সম্পর্কে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
শারদীয় দুর্গা পূজা ও বিজয়া দশমী উপলক্ষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘শারদীয় দুর্গা পূজা বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। আবহমান কাল ধরেই উপমহাদেশে এই ধর্মীয় উৎসবটি আনন্দঘন পরিবেশে পালিত হয়ে আসছে। যেকোনও ধর্মীয় উৎসবই সাম্প্রদায়িক ভেদরেখা অতিক্রম করে মানুষে মানুষে মহামিলন সূচনা করে। শারদীয় দুর্গা পূজার উৎসব সবার মধ্যে নিয়ে আসে আনন্দের বার্তা। এই উৎসব বাংলাদেশের একটি শ্বাশ্বত সার্বজনীন উৎসব।’
আরও পড়ুন-
প্রস্তুতি সম্পন্ন: আজ বোধন, কাল শুরু দুর্গা পূজা
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ: এরশাদ