বৃহস্পতিবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির মহাসচিব বাংলা ট্রিবিউনকে এমন মন্তব্য করেন। তিনি খালেদা জিয়ার ক্ষমা প্রসঙ্গ, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য ও তারেক রহমান নিয়ে মোবাইল ফোনে কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্যের প্রেক্ষিতেই নিজের অবস্থান ব্যক্ত করেন। গণভবনে সিনিয়র সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া আমাকে কিসের জন্য ক্ষমা করেছেন? ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার পরও আমি বেঁচে গিয়েছি, তিনি কি এ কথা বলছেন? তিনি ক্ষমা করেছেন নাকি চাচ্ছেন, তা আমার কাছে স্পষ্ট নয়। তার কাছে কেন ক্ষমা চাইবো? আমি এমন কী অপরাধ করেছি? বরং তার উচিত দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়া।’
প্রসঙ্গত, গত ৯ নভেম্বর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে চতুর্থ দিনের বক্তব্য দিতে গিয়ে আদালতকে খালেদা জিয়া বলেন, শেখ হাসিনার প্রতি প্রতিহিংসামূলক আচরণ করবেন না তিনি। প্রতিহিংসার রাজনীতিও করবেন না। শেখ হাসিনাকে তিনি ক্ষমা করে দিয়েছেন।
বিএনপির মহাসচিব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তার দলের চেয়ারপারসনের ক্ষমা করার বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, ‘ক্ষমা প্রসঙ্গে আমাদের চেয়ারপারসন যা বলেছেন, তা হচ্ছে; দেশের যে অবস্থা তৈরি হয়েছে, বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সাংবিধানিক যে সংকট, রাজনৈতিক যে পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক যে সংকট, জনগণের নিরাপত্তার অভাব, হাজার-হাজার মানুষ খুন-হত্যা ও গুমের শিকার হতে হচ্ছে। এসব কারণে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, এই দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রাজনীতিকে ধ্বংস করার জন্য, সংবিধানকে ধ্বংস করার জন্য আমাদের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ক্ষমা চাওয়ার কথা বলেছেন।’
প্রতিক্রিয়ার শুরুতেই মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অনেক বক্তব্য দেন, আমরা খুব গুরুত্ব দেই না। কারণ, তিনি অনেক সময় বক্তব্য দেন, যার রাজনৈতিক মূল্য আছে বলে আমার কাছে মনে হয় না।’
মির্জা ফখরুল যোগ করেন, ‘আর ক্ষমা চাওয়ার বিষয় না, ক্ষমা করে দিয়েছেন। মূল কারণটা হচ্ছে, দেশনেত্রীর ওপরে যে নির্যাতন চলেছে, সরকার যে নিপীড়ন চালাচ্ছে, মিথ্যে মামলা দিয়ে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে, এ কারণেই তিনি বলেছেন, আমি ক্ষমা করে দিচ্ছি। আমি কোনও প্রতিহিংসা চাই না।’
গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্পর্কেও কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘একদিন না একদিন দেশে ফিরে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতেই হবে।’ এ বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দেখা যাক- কে, কাকে জনগণের সামনে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়! তা ইতিহাস ও ভবিষ্যৎ প্রমাণ করবে।’
আরও পড়ুন:
‘সৌদি আরবে খালেদার সম্পদ নিয়ে সংবাদমাধ্যমের আগ্রহ নেই কেন’
ভোট দিলে আছি, না দিলে নাই: প্রধানমন্ত্রী