যুক্তরাজ্য বিএনপির কাউন্সিল স্থগিত

বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদকের সভাপতিত্বে যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতাদের বৈঠকে মঙ্গলবারের কাউন্সিল স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, বৈঠকের আগের ছবিযুক্তরাজ্য বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল আজ মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) বিকালে। কিন্তু ত্রুটিপূর্ণ কাউন্সিলর তালিকা প্রণয়ন ও সেখানকার শীর্ষ বিএনপি নেতাদের ব্যক্তিগত কেলেঙ্কারীসহ বিভিন্ন অভিযোগে কাউন্সিল নিয়ে বিরোধিতা ও বিতর্ক তৈরি হলে কাউন্সিলের আগের রাতে তা স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার ভোরে (যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় সোমবার রাত) চলমান এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে উপস্থিত যুক্তরাজ্য বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাজ উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তাজ উদ্দিন জানান, সোমবার রাতে (লন্ডন সময়) বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমানের সভাপতিত্বে এক বৈঠক শুরু হয়। যুক্তরাজ্য বিএনপির কাউন্সিলকে ঘিরে সৃষ্ট বিভিন্ন বিতর্ক নিয়েই কাউন্সিলের আগের রাতে এই বৈঠকটি আয়োজন করা হয়। সেখানেই চলমান বিতর্ক এড়াতে কাউন্সিল স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার ভোর ৪টা, লন্ডন সময় সোমবার রাত ১০টা) বৈঠকটি চলছে।
যুথক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমদ চৌধুরী কাউন্সিল স্থগিতের সিদ্ধান্তে সন্তোষ জানিয়ে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ত্রুটিপূর্ণ কাউন্সিলর তালিকা তৈরি করে কাউন্সিলের আয়োজন করা হয়েছিল। এর বিরুদ্ধে দলের নেতাকর্মীরা রাজনৈতিকভাবে রুখে দাঁড়ানোয় গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে। বিএনপি কতটা গণতান্ত্রিক, এটা তারই নজির।’
জানা গেছে, যুক্তরাজ্য বিএনপির বর্তমান সভাপতি এম এ মালেক ও সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও কমিটি গঠনে অস্বচ্ছতার অভিযোগ তোলেন দলের সহ-সভাপতি আক্তার হোসেন। গত বছর দলীয় সভায় এসব অভিযোগ তুলে বক্তব্য রাখার জের ধরে আক্তার হোসেনকে দলে কোণঠাসা করার চেষ্টা চালায় প্রতিপক্ষ গ্রুপ। তারা আক্তার হোসেনকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে কাউন্সিল আয়োজন করে ফের নির্বাচিত হওয়ার চেষ্টা চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
যুষক্তরাজ্য বিএনপির সদস্য টিপু আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আক্তার হোসেন, নাসিম আহমদ চৌধুরীর মতো নেতারা দলে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন। নেতার কাছে (তারেক রহমান) দলীয় শৃঙ্খলা মেনে প্রতিকার চেয়েছেন লিখিতভাবে। কাউন্সিল স্থগিত হওয়াটা দলীয় শৃঙ্খলার জন্য অনেক ভালো হয়েছে।’
কাউন্সিলর নির্বাচন প্রক্রিয়া ও প্রার্থিতার প্রক্রিয়া নিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা ছাড়াও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কিছু অনৈতিক কাজ ও বক্তব্যের ভিডিও সম্প্রতি প্রকাশ হয়ে পড়লে তা সমালোচনার জন্ম দেয়। অভিযোগ রয়েছে, ২ জানুয়ারি কাউন্সিলের ঘোষণা দেওয়া হলেও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া কেউই জানতেন না এর ভেন্যু কোথায়। এ পরিস্থিতিতে দলের একাধিক গ্রুপ মঙ্গলবারের কাউন্সিল ঠেকানোর ঘোষণা দিয়ে মাঠে নামে। এতে যুক্তরাজ্যজুড়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মঙ্গলবারের কাউন্সিল স্থগিতের ঘোষণা এলো কাউন্সিলের আগের রাতেই।