কমিটি ঘোষণা ছাড়াই শেষ হলো যুক্তরাজ্য বিএনপির কাউন্সিল

যুক্তরাজ্য বিএনপির কাউন্সিলকমিটি ঘোষণা ছাড়াই শেষ হলো যুক্তরাজ্য বিএনপির বহুল আলোচিত কাউন্সিল। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) লন্ডনের বয়েল রিজেন্সি হলে এ কাউন্সিল অনুরষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলের দায়িত্বে থাকা বিএনপির কেন্দ্রীয় আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, পরে কেন্দ্র থেকে কমিটি ঘোষণা করা হবে।
যদিও যুক্তরাজ্য বিএনপির বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া কমিটির শীর্ষ পদের পাঁচ প্রার্থী ও তার অনুসারীরা কাউন্সিল বয়কট করেন। ফলে, সোমবারের সম্মেলনটি কার্যত নিয়ম রক্ষার সম্মেলনে পরিণত হয়।
কাউন্সিলের সমাপনী বক্তব্যে মাহিদুর রহমান বলেন, ‘আজকের (সোমবার) এই সম্মেলন থেকে আমি কমিটির কারও নাম ঘোষণা করছি না। পরবর্তী সময়ে কেন্দ্র থেকে কমিটি ঘোষণা করা হবে। কেন্দ্র থেকে যে ঘোষণা আসবে, তা সবাইকে মানতে হবে।’
এর আগে, গত ২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল যুক্তরাজ্য বিএনপির কাউন্সিল। ওই কাউন্সিলের ভোটার তালিকা তৈরিসহ বিভিন্ন বিষয়ে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ওঠে। কাউন্সিল নিয়ে যুক্তরাজ্য বিএনপিতে একাধিক গ্রুপও পরস্পরবিরোধী অবস্থান নেয়। এ পরিস্থিতিতে কাউন্সিলের আগের দিন ১ জানুয়ারি রাতে দলের কেন্দ্রীয় আর্ন্তজাতিক সম্পাদক মাহিদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় কাউন্সিল স্থগিত করা হয়। পরে তা ১৫ জানুয়ারি আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাহিদুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত হয় নির্বাচন কমিশন। যুক্তরাজ্য বিএনপির নতুন কমিটি বেছে নিতে ওই নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দেয়। ওই কমিশন বিএনপির যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ফি নির্ধারণ করে দুই হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় দুই লাখ ২০ হাজার টাকা), সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য দেড় হাজার পাউন্ড।
যুক্তরাজ্য বিএনপির বর্তমান সভাপতি এম এ মালেক ছাড়াও সভাপতি পদে মনোনয়নপত্র কেনেন সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান চৌধুরী তপন ও বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাজ উদ্দীন। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য মনোনয়নপত্র কেনেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমদ চৌধুরী, যুক্তরাজ্য যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক দেওয়ান মুকাদ্দেম চৌধুরী নিয়াজ ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাহির রায়হান চৌধুরী পাবেল। গত শনিবার (১৩ জানুয়ারি) এসব মনোনয়পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন থাকলেও বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া বাকি পাঁচ জনের কেউই মনোনয়নপত্র জমা দেননি।
জানা গেছে, নির্বাচন প্রক্রিয়ার চারটি বড় ধরনের অসঙ্গতির প্রতিকার চেয়ে এই পাঁচ প্রার্থী গত ১২ জানুয়ারি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। যদিও প্রার্থীরা কেউই এ বিষয়ে মুখ খোলেননি গণমাধ্যমের কাছে।
তবে যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান চৌধুরী তপন সোমবার লন্ডন সময় সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টায় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি এই সম্মেলনে সভাপতি পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি। কিন্তু কেন নির্বাচনে অংশ নেইনি, সেটি দলের হাইকমান্ড জানেন। আজকের (সোমবার) সম্মেলনে কোনও কমিটি ঘোষণা না হওয়ায় আমরা আশাবাদী, কেন্দ্র থেকে দলের জন্য ইতিবাচক কোনও সিদ্ধান্ত আসবে।’
আরও পড়ুন-
তাবিথই পেলেন বিএনপির মনোনয়ন
বাম-প্রগতিশীলদের একক প্রার্থী জোনায়েদ সাকি