ঢাকা মহানগরীতে শনিবার বিএনপির বিক্ষোভ

কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরবিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে আগামী ১০ মার্চ ঢাকা মহানগরীর থানায় থানায় বিক্ষোভ ডেকেছে দলটি। বৃহস্পতিবার (৮ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘যারা আমাদের নেতৃস্থানীয় ও দল পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত, তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। তাই আমরা আগামী ১০ মার্চ ঢাকা মহানগরের থানায় থানায় প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করছি।’

মির্জা ফখরুলের ভাষ্য, ‘আমরা আদালতের কাছে যেতেও ভয় পাই। কারণ আমরা দেখ‌ছি, বর্তমান সরকার আদালতের ওপর পূর্ণ কর্তৃত্ব নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে। তাই সেখানে যাবো কী যাবো না তা ভেবে দেখতে হবে।’

বিএনপি মহাসচিবের কথায়, ‘আমরা শা‌ন্তিপূর্ণভাবে কর্মসূ‌চি করতে চাই। গতকালও (৭ মার্চ) দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে‌ছি। কোনও উস্কানিতে পা না দিয়ে ধৈর্য ধরে শা‌ন্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন কর্মসূ‌চি চা‌লিয়ে যেতে বলেছেন তি‌নি। সেই লক্ষ্যে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে শা‌ন্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যা‌চ্ছি। তারপরও ফ্যা‌সিস্ট সরকারের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না।’

মির্জা ফখরুলের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা বা‌হিনী সদস্যরা তাদের সভায় ঢুকে ‌নেতাকর্মীদের মতো বসে থাকে। অনেক সময় সরকারের পক্ষে স্লোগানও দিতে দেখা যায়। ‌তি‌নি বলেন, ‘যে প্রক্রিয়ায় আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, কোনও স্বাধীন দেশে এভাবে কাউকে গ্রেফতার হতে দেখিনি। আমরা এটাকে হিটলার কিংবা অন্যান্য শাসকদের আক্রমণ ও অত্যাচারের সঙ্গে তুলনা করতে পারি।

বৃহস্পতিবার (৮ মার্চ) সকালে পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়েছে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি। এতে যোগ দিয়েছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারাও। তবে কর্মসূচি চলাকালে সাদা পোশাকে পুলিশ হাজির হলে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এ সময় ছাত্রদল ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতিসহ তিন জনকে আটক করে পুলিশ।

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের চোখের সামনে সব ঘটনা ঘটলো। এতটুকু সৌজন্যবোধ দেখায়নি তারা। আমাদের কর্মসূচি যেন শেষ না হয় সেভাবেই তারা আক্রমণ করেছে।’

বিএন‌পি মহাস‌চিবের কথায়, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়ার পর থেকে আমরা সব শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিয়েছি। এতেই বোঝা যায় সরকারের গাত্রদাহ হচ্ছে। এ কারণে তারা উস্কানি দিয়ে আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বানচাল করে দিয়েছে। একইসঙ্গে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।’

৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল। এই রাজনীতিবিদের ভাষ্য, ‘প্রধানমন্ত্রী জনসভায় যে বক্তব্য রেখেছেন তা থেকে প্রমাণিত হয় গণতন্ত্র শুধু তাদেরই জন্য। এই দেশটা যেন তাদের। এখানে অন্য কারও কোনও অবস্থান নেই। আমরা দুঃখ ও হতাশার নিয়ে বলছি, এই অনৈতিক ও অবৈধ সরকার যে ব্যবস্থা চালু করলো তাতে আবারও গণতন্ত্রে ফিরে আসা অত্যন্ত দুরূহ কাজ হবে। তারা ঠিকই জনসভা করছেন, অথচ আমাদের অনুম‌তি দেওয়া হচ্ছে না। আজও বিএন‌পির এক‌টি প্র‌তি‌নি‌ধি দল ডিএম‌পি কার্যালয়ে জনসভার অনুম‌তির জন্য গিয়েছিল। কিন্তু তারা গোয়েন্দা সংস্থার প্র‌তিবেদন পেলে জানাবেন বলে দিয়েছেন।’